নাসার দাবি : অর্ধশত বছরে পদ্মার গর্ভে ৬৬০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশের রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের সর্বমোট আয়তন প্রায় ২৭০ বর্গ কিলোমিটার। কিন্তু ১৯৬৭ সাল থেকে আমাদের ৬৬ হাজার হেক্টরেরও (প্রায় ২৫৬ বর্গমাইল বা ৬৬০ বর্গ কিলোমিটার) বেশি জমি পদ্মা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আয়তনে যা ঢাকা শহরের প্রায় আড়াই গুণের সমান।

আগস্টে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) আর্থ অবজারভেটরি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

universel cardiac hospital

নাসা আর্থ অবজারভেটরির অ্যানিমেশনটির মাধ্যমে ১৪টি রঙিন স্যাটেলাইট ছবির মাধ্যমে ১৯৮৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে পদ্মা নদী কীভাবে তার আকৃতি ও পথ পরিবর্তন করেছে তা দেখিয়েছে।

বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটের ছবিতে পদ্মা নদীর প্রস্থ, গভীরতা, গঠন এবং সামগ্রিক আকারের পার্থক্য উল্লেখ করে ভাঙন পরিমাপ করেন। নাসার ‘ভাঙনের আকৃতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া সাম্প্রতিক ছবিগুলোর সঙ্গে ১৯৮৮ সাল থেকে পদ্মার আকৃতি এবং প্রস্থের পরিবর্তনগুলো তুলনা করেছে।

ইউএনবি এই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানায়, পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনের দুটি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি প্রাকৃতিক, মুক্ত প্রবাহিত নদী সুরক্ষার তেমন ব্যবস্থা নেই। দ্বিতীয়ত, নদীর তীরে বড় বালুচর রয়েছে, যা দ্রুতই ভেঙে যেতে পারে।

নাসার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন দশক ধরে পদ্মা নদী তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ, সোজাসুজি অবস্থান পরিবর্তন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। স্যাটেলাইট ছবিতে, সবচেয়ে লক্ষণীয় পরিবর্তন হয়েছে হরিরামপুর উপজেলার অঞ্চলের নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভাঙন হয়েছে। ১৯৯৮ সালে ভারতে ফারাক্কা বাঁধ উদ্বোধনের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে বন্যা দেখা দেয়, যা বাংলাদেশে আরও বেশি পানি ঢুকে পড়ে।

এর আগে, ‘চর জানাজাতের’কাছে জায়গা-জমি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৯৫-৯৬ সাল থেকে নদীর রেখাচিত্র তীব্রভাবে বেঁকে যায়। বক্ররেখাটি ১৯৯২ সাল থেকে বিকশিত হতে শুরু করে, ২০০২ সালে পতন শুরু হয় এবং এরপর থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

প্রতিবেদনটির শেষাংশে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোর, পদ্মার ভাঙনের হার প্রকৃতপক্ষে হ্রাস পেয়েছে। নদীটি বক্ররেখার পরিবর্তে জমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে এলাকাটি ভাঙন থেকে মুক্ত।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে