ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাংকের অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু নীতিমালা না থাকায় দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এতদিন সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিত না। বরং দাবির মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পর তামাদি সম্পত্তিকে নিজেদের আয়ের খাতায় যুক্ত করত তারা। কিন্তু এখন থেকে ব্যাংকগুলো এসব সম্পত্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বাধ্য থাকবে। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পক্ষ থেকে একটি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, গ্রাহক ১০ বছর পর্যন্ত লেনদেন বা যোগাযোগ না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৫(১) ধারা অনুযায়ী তাদের পরিশোধযোগ্য অর্থ, পরিশোধযোগ্য চেক, ড্রাফট বা বিনিময় দলিল এবং ব্যাংকের জিম্মায় রক্ষিত মূল্যবান সামগ্রী অদাবিকৃত অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে সরকার, নাবালক বা আদালতের অর্থ এ নিয়মের আওতায় পড়বে না।
গণনাকৃত অর্থ ও চেক, ড্রাফট বা বিনিময় দলিলের পাওনাদারদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি এবং মূল্যবান সামগ্রীর আমানতকারীকে তার দেয়া ঠিকানায় রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে তিন মাসের লিখিত নোটিশ পাঠাতে হবে। ড্রাফট বা বিনিময় দলিলে পাওনাদারের ঠিকানা পাওয়া না গেলে আবেদনকারীর ঠিকানায় অনুরূপ নোটিশ পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে আইনের ৩৫(৩) ধারা অনুসরণ করতে হবে।
নোটিশ পাঠানোর তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও যদি কোনো প্রাপ্তি স্বীকারপত্র বা উত্তর না আসে, তবে আইনের ৩৫(২) অনুযায়ী অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী প্রতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অদাবিকৃত আমানতের অর্থ সুদসহ চেক/পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হবে এবং দেশী ও বৈদেশিক মুদ্রার আমানতের অর্থ পৃথকভাবে হিসাবায়ন করতে হবে। দেশী মুদ্রার আমানতের ক্ষেত্রে টাকায় অংকিত চেক/পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে জমা দিতে হবে।
বৈদেশিক মুদ্রার আমানতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ছয়টি বৈদেশিক মুদ্রা— মার্কিন ডলার, পাউন্ড, ইউরো, কানাডীয় ডলার, জাপানি ইয়েন ও চীনা ইউয়ান রেনমিনবিতে অংকিত চেক/পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ফরেক্স অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে জমা দিতে হবে। অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে সমমূল্যের মার্কিন ডলারে অংকিত চেক/পে-অর্ডার প্রদান করতে হবে।
অদাবিকৃত আমানতের অর্থ জমা দেয়ার ফরওয়ার্ডিং লেটারের সঙ্গে নির্ধারিত ছকে বিভিন্ন তথ্য ও দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে। ফরওয়ার্ডিং লেটারের একটি অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে পাঠাতে হবে।