ঢাকাই চলচ্চিত্রে নব্বই দশকের এক ধূমকেতুর নাম সালমান শাহ। যদিও তার মূল নাম চৌধুরী শাহরিয়ার ইমন। ধূমকেতুর মতোই ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করে হঠাৎ করেই যিনি চলে গেলেন।
শুরুটা হয়েছিল গানে মডেলিংয়ের মাধ্যমে। ১৯৮৫ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হানিফ সংকেতের ‘কথার কথা’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে মাদক সচেতনতাবিষয়ক ‘নামটি ছিল তার অপূর্ব’ শিরোনামে একটি গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছিলেন শাহরিয়ার ইমন।
তারপর ‘দেয়াল’, ‘সব পাখি ঘরে ফিরে’, ‘সৈকতে সারস’, ‘নয়ন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’সহ বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেন তিনি। এছাড়াও ১৯৯০ সালে মঈনুল আহসান সাবের রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘পাথর সময়’ ও ১৯৯৪ সালে ‘ইতিকথা’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি পাওয়া মৌসুমীর বিপরীতে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।
তখন নাম বদলে হয়ে যান সালমান শাহ। তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র জহিরুল হক ও তমিজউদ্দিন রিজভী পরিচালিত ‘তুমি আমার’ ব্যবসা সফল হয়। এতে তার বিপরীতে ছিলেন শাবনূর। এ ছবির সফলতায় শাবনূর-সালমান শাহ জুটি একে একে মোট ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেন।
ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে, পরিচালক-প্রযোজকরা যখন মাসের পর মাস ঘুরেও তার সিডিউল পাচ্ছিলেন না, পেলেও দু’বছর পরের তারিখ নিতে হচ্ছে ঠিক এ রকম একটা সময়ে শোনা গেল সালমান শাহ আর নেই। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিটিভির বিকালের সংবাদে সে খবরটি শুনে কয়েকজন তরুণী আত্মহত্যাও করেন।
মৃত্যুর ২২ বছর পরও সালমান শাহের জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলায় অবস্থিত জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
আজ তার ৪৭তম জন্মদিন। ভক্তরা বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রিয় নায়ককে ছাড়াই গত ২২টি বছর তার জন্মদিন পালন করে যাচ্ছেন। ব্যতিক্রম ঘটছে না আজও। এফডিসিসহ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন। মৃত্যুর ২২ বছর পরও সালমান শাহ আজও শুধু দর্শকদের মনেই নয়, অনেক তারকার প্রিয় নায়ক হয়ে বেঁচে আছেন।