প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের পথে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে আগামী শুক্রবার ঢাকা ত্যাগ করবেন। বাসস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ছয়দিনের সরকারি সফরে লন্ডনে দু’দিনের যাত্রাবিরতির পর রোববার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে তিনি নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন। একইদিন জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে। অধিবেশন ছাড়াও নিউইয়র্কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেবেন।
শুক্রবার সকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। একইদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় ৩টা ৫৫ মিনিটে হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।
লন্ডনে যাত্রাবিরতির পর রোববার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে শেখ হাসিনা নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন। একই দিন স্থানীয় সময় ১টা ৪০ মিনিটে নিউজার্সির নিউইয়র্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।
অধিবেশনের ফাঁকে একাধিক বিশ্ব নেতার সঙ্গেও শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালিজুলেইদ ও নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত সংবর্ধনায় তিনি যোগ দেবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও’র সঙ্গেও তিনি সাক্ষাৎ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের মিডটাউনের হোটেল হিলটনে প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত এক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা যোগ দেবেন। দ্বিতীয় দিন স্থায়ী মিশনের ‘গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অন ড্রাগ প্রবলেম’ শীর্ষক হাই লেভেল ইভেন্টে তিনি যোগদান করবেন।
পরে জাতিসংঘ সদর দফতরের ইকোসক চেম্বার’র (ইসিওএসওসি) ইউএন হাইকমিশনার ফর রিফ্যুজিস আয়োজিত ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন রিফ্যুজিস: এ মডেল ফর গ্রেটার সলিডারিটি অ্যান্ড কোঅপারেশ’ শীর্ষক হাইলেভেল ইভেন্টে তিনি অংশ নেবেন।
হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত গোলটেবিল মধ্যাহ্নভোজন বৈঠকেও তিনি অংশ নেবেন। বিকালে সাধারণ পরিষদের সম্মেলন কক্ষে নেলসন ম্যান্ডেলা পিস সামিটেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে।
নিউইয়র্কের কনভেন কনফারেন্স সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইমপ্যাক্ট সামিট’-এ তার যোগদানের কথা রয়েছে। জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূতের ‘মেকিং ইমপসিবল পসিবল : আনলকিং হিউম্যান পটেনশিয়াল থ্রো দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি ফর এডুকেশন’ শীর্ষক হাই লেভেল ইভেন্টে শেখ হাসিনা অংশ নেবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সচিবালয়ের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত হাইলেভেল সাইড ইভেন্টে শেখ হাসিনা অংশ নেবেন।
জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজেরও সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্টের আয়োজনে ‘নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একইদিন সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন এবং নিউইয়র্কের পার্ক অ্যাভেনিউয়ে গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন আয়োজিত বার্ষিক নৈশভোজে তিনি যোগ দেবেন।
এবারো সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের নিউইয়র্ক কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকালে শেখ হাসিনা নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একটি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন। ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আবুধাবী হয়ে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।