আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতে বিচার চলবে কি না, আর তিনি জামিনে থাকবেন কি না- এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বিচারপতি ড. আখতারুজ্জামান শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
সেদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল।
আরেক আসামি জিয়াউল ইসলামের আইনজীবী আমিনুল হক এ বিচার কার্যক্রম আইনসম্মত নয় উল্লেখ করে মামলার কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন।
নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল গত ১২ সেপ্টেম্বর। তবে খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় কাস্টডি প্রতিবেদন পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া তার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেন।
অন্যদিকে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির বিরোধিতা করে শুনানি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল।
এমতাবস্থায় গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আদালত মুলতবি করেছিলেন বিচারক।
গত ১ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির পরবর্তী দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডের পর বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাওয়ার সেই শুনানি আর হয়নি। এরপর শুনানির জন্য নির্দিষ্ট একাধিক দিন বিএনপি নেত্রী হাজিরা দেননি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে।
এই মামলায় তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষেই আসার কথা ছিল রায়। কিন্তু শুনানি হতে না পারায় মামলাটি ঝুলে যায় আর বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে কারাগারেই আদালত নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৪ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হলে ৫ সেপ্টেম্বর কারাগারে বসে সেই আদালত। হুইল চেয়ারে করে আসেন বিএনপি নেত্রী।
কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়া বিচারককে বলেন, ‘আপনার যা ইচ্ছা আমাকে সাজা দিন। আমি আর আসতে পারব না। আমার শরীর অনেক খারাপ। মেডিকেল রিপোর্ট দেখলে আপনারা বুঝতে পারতেন। এই আদালতে ন্যায়বিচারও হবে না।’
সেদিনের শুনানি শেষে ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়।
গত ৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকলেও যাননি তার আইনজীবীরা। তবে গতকাল বুধবার বিএনপি নেত্রী না এলেও উপস্থিত ছিলেন তার আইনজীবীরা।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার মতোই চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা চলছে বিচারক আখতারুজ্জামানের আদালতে। এর মধ্যে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ এসেছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটিও অরফানেজ ট্রাস্ট মামলারই অনুরূপ।
ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি করে দুদক। এতে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। এরপর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়।
মামলাটিতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী এবং হারিছের তৎকালীন একান্ত সচিব (বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক) জিয়াউল ইসলাম মুন্না, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।