মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থী ইব্রাহীম মোহাম্মদ সোলিহ নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের চেয়ে তিনি ১৬ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বলে দাবি করেন।
রাজধানী মালেতে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এটা সত্যিই প্রত্যাশা ও আনন্দের মুহূর্ত। এটা এমন এক সফর যেটা ব্যালট বক্সের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। কারণ জনগণ এমনটাই চাচ্ছেন।
সোলিহ বলেন, বার্তা খুবই পরিষ্কার, মালদ্বীপের জনগণ পরিবর্তন, শান্তি ও ন্যায়বিচার চায়। জনগণের রায় মেনে নিতে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি। এতে করে সংবিধান অনুসারে অত্যন্ত মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তারিত হবে।
এর আগে নানা উদ্বেগ নিয়ে ভোট শুরু হলেও ভোটারদের বিপুল উৎসাহের মধ্য দিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে দেশটির সবগুলো কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
বিকাল ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লম্বা লাইন থাকায় ভোট গ্রহণের সময় তিন ঘণ্টা বাড়ানো হয় বলে জানান কর্মকর্তারা।
মালদ্বীপ স্বচ্ছ পানি ও নজরকাড়া অবকাশ কেন্দ্রের জন্য পরিচিত হলেও সম্প্রতি বিরোধী মতের দমনে দেশটির সরকারের নানা পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা চলছে।
ভোটের আগের রাতে মালদ্বীপের পুলিশ বিরোধী দলগুলোর সদরদপ্তরগুলোতে হানা দিয়েছিলে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দক্ষিণ এশীয় এ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির উন্নয়ন না ঘটলে মালদ্বীপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির নির্বাচনের দিকে কড়া নজর রাখছে এশিয়ার দুই প্রভাবশালী দেশ ভারত ও চীন।
প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। বিরোধী প্রার্থী ইব্রাহীম মোহাম্মদ সোলিহর ঝোঁক ভারত ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর দিকে।
গতকাল রবিবারের ভোটের পর গণনায় বড় ধরনের জালিয়াতি হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল বিরোধী জোট। ভোটারদের প্রত্যেকের ব্যালট পেপার যাচাইয়ে পর্যবেক্ষকদের সুযোগ না দেয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ইয়ামিনের হয়ে কাজ করার অভিযোগও এনেছে তারা।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ইয়ামিন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছে।