আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী কারো সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে যাবে না। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয় এমন কোন দলীয় কর্মসূচিও দেবে না। তবে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ দেশে নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টি করতে চাইলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ভূত পরিস্থিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের এক যৌথসভায় এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ক্ষমতাসীন দল, আমাদের ভরা কলসি, ভরা কলসি নড়ে না। বিএনপির কলসি শূন্য, তাদের কলসি বেশি নড়াটাই স্বাভাবিক। তাই, আমাদের উত্তেজিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারো উস্কানীতে আমরা পা দেব না।’
তিনি বলেন, তবে বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক ভাবে না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, এমপি, আব্দুর রহমান, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এমপি, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, বিজ্ঞাণ ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রীক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত হচ্ছি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহন করছি। সারাদেশে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি অর্ধেক শেষ হয়েছে। সারাদেশে আমাদের দলীয় নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ চলছে। এ পরিস্থিতিতে কেন আমরা কারো উস্কানীতে পা দেব?
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গে ট্রেনযাত্রা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সড়ক পথে সাংগঠনিক সফরে মানুষের যে ঢল দেখেছি, তাতে তারা নির্বাচনী মেজাজে রয়েছেন, তারা কোন সহিংসতা দেখতে চায় না। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বেও প্রতি আস্থাশীল এবং বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেছে।
কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১ অক্টোবর থেকে এক সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড এবং সারাদেশের জেলা, উপজেলা ও ইউনয়ন পর্যায়ে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করব। রাস্তায় মানুষের দুর্ভোগ হয় এমন কোন কর্মসূচি আমরাও করব না, কাউকে করতেও দেয়া হবে না।
বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চাইলে তা করুক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এর পাল্টা কোন কর্মসূচি দেব না। তবে, তিনি রাজধানীসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় ১৪ দলের আগামী শনিবারের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দল পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে। আগামী শনিবার সে কর্মসূচিকে আরো বড় পরিসরে করার জন্য রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করবে। এটা বিএনপির সঙ্গে কোন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আর বিএনপির একই দিনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচির ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এখনো অনুমতি দেয় নি। আর তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমোদন ছাড়া কোন কর্মসূচি পালন করবেন তা তো হতে পারে না।
যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির ঐক্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)-এর জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা শতকরা ৬৬ ভাগ, আর আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শতকরা ৬৪ ভাগ।
জনতার সিংহভাগকে বাদ দিয়ে কখনো কোন জাতীয় ঐক্য হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির যে ঐক্য সেটা জনতার ঐক্য নয়, জাতীয় ঐক্য নয়। তাদের ঐক্য নেতায় নেতায় ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। আর জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি এক পা এগুতে পারবে না। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের নেতারা শর্ত দিয়েছে যে জামায়াত থাকলে তারা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে তাদের মধ্যে কোন উদ্বেগ নেই, তবে সতর্কতা রয়েছে।
রাজনীতি