একজন মানুষ ও রাজনীতিক শেখ হাসিনা : র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

ফাইল ছবি

জন্ম ১৯৪৭ সনের ২৮ সেপ্টেম্বর। ২০১৮ সনের আজকের দিনে তিনি পা রাখলেন ৭২ এ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিনি, শেখ হাসিনা এম.পি। তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে এক নাগারে চলছে দ্বিতীয়বারের মতো। টানা দশ বছর। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এ প্রথম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকারের ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন তিনি। সে হিসেবে সাকুল্যে ১৫ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রীর গুরুভার সামলিয়েছেন ও সামলাচ্ছেন। প্রথমবার ক্ষমতায় আসতে তাঁকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে এবং এমন অনেকের সহায়তা নিতে হয়েছে যাঁরা গণতন্ত্রের প্রতি কতটা আস্থাশীল তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। তারপরও তিনি ছিলেন সরকার পরিচালনায় একেবারে নবীণ এবং অভিজ্ঞতার দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে গেলে অনেকটাই নবিস। কিন্তু খুবই দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছিলেন একাগ্র দেশপ্রেম ও মানবিক গুণাবলি নিয়ে। সেবার ক্ষমতায় এসেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, তাঁর সরকার শাসকের নয়, জনগণের সেবক সরকার।

শেখ হাসিনাকে ভবিষ্যত ইতিহাস যেভাবেই মূল্যায়ন করুক না কেন, তিনি যে একজন সফল ও যোগ্য রাষ্ট্রনেতা এ কথা অস্বীকার করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। পিতৃমাতৃ ভ্রাতৃহারা স্বজনহারা একজন রাজনীতিক বুকে শোকের পাথর বেঁধে জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন অক্লান্ত ভাবে। যে কোন মানবিক বিচারেই তাঁর এই অবিরাম পথ চলাকে আশ্চর্য্ ও অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখবে ইতিহাস এবং ইতিহাস বিচারও করবে নির্মোহ এক দৃষ্টিকোণ থেকে। ইতিহাসের কোন পক্ষপাত নেই। যদিও এ কথা সত্য যে ইতিহাস শুধু বিজয়ের পক্ষেই দাঁড়ায়। পরাজয়ের কোন যোগ্য স্থান নেই ইতিহাসে। কেননা বিজয়ই তো ইতিহাসের গতিপথকে নির্ধারণ করে।

universel cardiac hospital

২১ বার যাঁর জীবনের ওপর হামলা হয়েছে, যাঁকে সৈরতন্ত্রী সরকার সমূহের সাথে কৌশলী লড়াই চালিয়ে আজকের জায়গায় এসে দাঁড়াতে হয়েছে, ইতিহাস তো তাঁর বিষয়ে বিচার করতে অনেক হিসাব কষেই এগুতে হবে। সকল মানবিক গুণাবলিই তাঁর মধ্যে কাজ করে। নির্লোভ এই রাজনীতিক রাজনীতিকে জনগণের কল্যাণ সাধনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছেন। স্নেহ মমতা আর ভালবাসায় অতুলনীয় এই মানুষটি স্নেহান্ধ নন, বিনম্র হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অটল ও দৃঢ়।

দেশের প্রধানতম রাজনৈতিক দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দলের অভ্যন্তরস্থ ডান-বামের এক নিরন্তর যুদ্ধের মোকাবেলা করে করে পথ চলতে হচ্ছে। বাকশালা, গণ-ফোরাম, ডানপন্থার কতনা বায়নাক্কা, মিথ্যাচার, অপ্রচার, হত্যা প্রচেষ্টা সামলে নিয়েই এগিয়ে যেতে হচ্ছে। মধ্যপন্থার অনুসারী শেখ হাসিনা তাঁর জীবনের সবকিছুতেই স্থান দিয়েছেন মানবকল্যাণ। আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করে সুশাসন নিশ্চিত করতে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকরীদের বিচার এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার কাজ সুসম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন শুধুই তাঁর একক দৃঢ় চিত্ততার কারণে।

জলে স্থলে অন্তরীক্ষে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে যিনি একাগ্র চিত্তে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তিনি শেখ হাসিনা। আর তাঁর ৭২তম জন্মদিনে আমরা কায়মনোবাক্যে তাঁর জীবনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।

লেখক : সম্পাদক, মত ও পথ

 

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে