প্রাচ্যের নয়া তারকা,দেশের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেত্রী এবং মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন আজ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়।
১৯৪৭ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
তাঁর জন্মদিনটি উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করেছে আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আনন্দ র্যালী ও শোভাযাত্রা বের করা হয় । জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়েও একই কর্মসূচি পালিত হয়।
দলের ত্রাণও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে সকাল ১০টায় ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে দরিদ্রদের মধ্যে রিক্সা-ভ্যান বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি এ অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তিকে পরাজিত করার শপথ নেয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশকে বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন এবং তারাও বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা প্রত্যাশা করছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির মুক্তির কান্ডারী। তাঁর নেতৃত্বের উচ্চতা ও গভীরতা সারা দুনিয়ায় প্রশংশিত ও সমাদৃত উল্লেখ করে কাদের বলেন, পুরো বাঙ্গালী জাতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য গর্বিত।
অনুষ্ঠানে কর্মক্ষম অসহায় ও দুঃস্থদের মধ্যে একশ’ রিকশা ও ভ্যান বিতরণ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাদ জুমা মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সর্বস্তরের মুসল্লী মোনাজাতে অংশ নেন।
এর আগে সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ এ উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত এ প্রার্থনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মন্ডল, সাংবাদিক স্বপন কুমার সাহা, মুকুল বোস প্রমুখ।
একই ভাবে সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার (মেরুল বাড্ডা) ও সকাল ৯ টায় খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) ওয়াই.এম.সি. এ চ্যাপেল, ২৯ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০এ বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে গৃহিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘নবীনদের দৃষ্টিতে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বক্তব্য রাখেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ , কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী , আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ , জাহাঙ্গির কবির নানক প্রমুখ
শেখ হাসিনার ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী চত্ত্বরে চিত্রাঙ্কন কর্মশালা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ১১ টায় হাসুমণি’র পাঠাশালা উদ্যোগে প্রথমবারের মতো চিত্রাঙ্কন কর্মশালা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ।
সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছোট্ট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে সেই হাসুমণি’র জন্মদিন উদযাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা অধ্যাপক গওহর রিজভী। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম, দেশবরেণ্য শিল্পী মণিরুজ্জামান মণিরসহ বিশিষ্টজনরা।
অনুষ্ঠানের সভপতিত্ব করেন হাসুমণি’র পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রবক্তা স্বপ্নদর্শী এই নেত্রী ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহনের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মত নির্বাচনে জয়লাভ করে দলকে দেশের নেতৃত্বের আসনে বসাতে সক্ষম হন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
অনেকেই মনে করেন , ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃশাসন এবং পরবর্তীতে তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্তৃত্বে দেশের সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে যখন অন্ধকার নেমে এসেছিল; ঠিক তখনই (২০০৯) প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষের সমর্থন নিয়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
নতুন শতাব্দীতে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানো মূলত সেখান থেকেই, যা গত কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত রয়েছে। যদিও নয় বছর খুব বেশি সময় নয়; অথচ এ সময়েই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব সূচকে যেভাবে তিনি অগ্রগতি, সাফল্য আর উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করেছেন; তাতে সহজেই অনুমেয়-আগামীর বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই তাঁর নেতৃত্বে উন্নত দেশের সারিতে কাঁধ মেলাতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ