দেশে প্রায় খেলায়ই লিটন দাসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খুন হয় প্রতিপক্ষ বোলাররা। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে সবসময় স্বরূপে খুঁজে পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে ঝলক দেখালেও ইনিংস লম্বা করতে পারেন না।
এবার সেই গেরো খুললেন প্রতিশ্রুতিশী এ ওপেনার। এশিয়া কাপের ফাইনালে খেললেন অনবদ্য সেঞ্চুরির ইনিংস। তার পুরস্কারও হাতেনাতে পেলেন তিনি। ফাইনালে দল হারলেও ম্যাচসেরা হয়েছেন বিস্ফোরক ব্যাটার।
বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার দিনে স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিলেন লিটন। সতীর্থদের যাওয়া-আসার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রাখেন তিনি। শুরু থেকেই স্বভঙ্গিমায় খেলে যান এ ওপেনার। চরম বিপর্যয়ের মধ্যেই ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মাত্র ৮৭ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। করুণ পরিস্থিতিতে লড়ে যাচ্ছিলেন বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত আউট থামিয়ে দেয় তাকে।
সেঞ্চুরির পর হাত খোলার প্রস্তুতি নেন লিটন। ঠিক সেই মুহূর্তে কুলদ্বীপের বলে মাহেন্দ্র সিং ধোনির স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। ফাঁদে পড়েন বললে ভুল হবে, তাকে ট্র্যাপে ফেলা হয়। চায়নাম্যান বোলারের বলটি মিস করলেও পা দাগের মধ্যেই ছিল তার। তবু রিপ্লে দেখেন আম্পায়ার। কয়েকবার জুম করে দেখার পর তাকে আউট দিয়ে দেন তৃতীয় আম্পায়ার রড টাকার। এতে থামে মারকুটে ব্যাটসম্যানের লড়াই।
এর আগে ১১৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১২১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেন সম্ভাবনাময়ী এ ওপেনার। তাকে আউট না দিলে আরো ২০-৩০ রান বেশি হতে পারতো। তা হলে হয়তো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতো বাংলাদেশ!
২২৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। একেবারে ইনিংসের শেষ বলে এসে শিরোপাটা ছিনিয়ে নিল রোহিত বাহিনী। সব মিলিয়ে ৭মবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের মুকুট জিতল তারা। ফলে ট্র্যাজিক হিরোই হয়ে থাকলেন লিটন।
ট্রফি ঘরে তুললেও চোখধাঁধানো কিছু করে দেখাতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটসম্যান বা বোলাররা। সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন রোহিত শর্মা। এছাড়া দিনেশ কার্তিক ৩৭ ও ধোনি করেন ৩৬ রান। হাতটাও ভালোভাবে ঘোরাতে পারেননি ভুবনেশ্বর কুমাররা। বোলিংয়ে জাদুকরী কিছু করে দেখাতে পারেননি বাংলাদেশ বোলাররা। ফলে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে লিটনের হাতে।
অভিনন্দন লিটন!