আমাদের শরীর চুলকানোর রহস্য খুব কমই উদঘাটন করা হয়েছে বা উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই দিকটি মানুষের মস্তিষ্কের গতিবিধি বা আচরণ নিয়ে বিস্ময়কর কিছু তথ্য হাজির করেছে।
চুলকানি নিয়ে নীচের ১০টি তথ্য আপনাকে বিস্মিত করবে-
১. আমরা দিনে কমবেশি ১০০ বার চুলকাই। এই লেখাটি যখন পড়ছেন, তখনও হয়তো আপনার শরীরের কোথাও চুলকাচ্ছে। চুলকে ফেলুন, কেউ দেখবে না।
২. কখনো কখনো কোনো পশু বা বৃক্ষ-লতার সংস্পর্শে শরীরে চুলকানি শুরু হয়ে যায়। এর কারণ এগুলো থেকে নিঃসরিত বিষ চামড়ায় লেগে হিস্টামিন নির্গত হয়। সাথে সাথে স্নায়ুকোষ তার ফাইবারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে চুলকানির বার্তা পাঠায়।
৩. কিছুদিন আগ পর্যন্ত মানুষের ধারণা ছিল, একই পথ দিয়ে চুলকানি এবং ব্যথার সিগন্যাল মস্তিষ্কে পৌছায়। কিন্তু ১৯৯৭ সালে এক গবেষণায় দেখা যায় চুলকানির স্নায়ুর ফাইবার পৃথক।
৪. ইঁদুররা চুলকাচ্ছে -এমন একটি ভিডিও আরেক দল ইঁদুরকে দেখিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। দেখেই ঐ ইঁদুররা চুলকাতে শুরু করেছিল।
৫. একেক স্নায়ু ফাইবারের একেক গতি। স্পর্শের সিগন্যালের গতি ঘণ্টায় ২০০ মাইল। দ্রুত ব্যথা (যখন আপনি অসাবধানে গরম হাড়িতে হাত দেন) ৮০ মাইল বেগে চলে। কিন্তু চুলকানির গতি ঘণ্টায় দুই মাইল- হাঁটার গতির চেয়ে মন্থর।
৬. সুপ্রাকিয়াসম্যাটিক নিউক্লিয়াস নামে মস্তিষ্কের ক্ষুদ্র একটি অংশ চুলকানির সংক্রমণের জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীদের এখনো কোনো ধারনা নেই যে কীভাবে মস্তিষ্ক একজনের চুলকানি দেখে আরেকজনকে চুলকাতে উৎসাহিত করে।
৭. কীট-পতঙ্গ বা বিষাক্ত লতাগুল্মের স্পর্শে প্রতিক্রিয়া হলে চুলকিয়ে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। চুলকানোর সময় আপনার রক্তের শিরা প্রসারিত হয়। ফলে নিঃসরিত হয় শ্বেত কণিকা যা বিষের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।
৮. ২০১২ সালে ব্রিটেনে এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, গোড়ালিতে চুলকানির ঝোঁক সবচেয়ে বেশি এবং সেখানে চুলকালে তৃপ্তিও পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি। গোড়ালি চুলকিয়ে দেখুন একবার।
৯. চামড়ায় চুলকানোর সময় বেশি বেশি হিস্টামিন নিঃসরিত হয়। ফলে আরো চুলকাতে ইচ্ছা করে। এই চক্র সম্পর্কে সাবধান থাকুন। কারণ বেশি চুলকালে চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়, জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে।
১০. চুলকালে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরিত হয়। ফলে পরিতৃপ্তির অনুভূতি হয়। বোঝাই যায়, কেন চুলকানির থামানো এত কঠিন।