বিএনপির সমাবেশ থেকে ৭ দাবি ও ১২ লক্ষ্য ঘোষণা

বিশেষ প্রতিনিধি

গতকাল আমাদের একজন আইনজীবী কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে দেখা করেছেন। তিনি খুবই অসুস্থ। তার পরেও তিনি আমাদেরকে, আপনাদেরকে বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তিনি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।

আজ রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এই কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের মুক্তিসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রীক নানা দাবিতে এই সমাবেশ ডাকে বিএনপি।

প্রায় এক বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের উৎসাহ ছিল ব্যাপক। এই সমাবেশে আলোচিত জাতীয় ঐক্য এবং আগামী নির্বাচন বিষয়ে কী ঘোষণা আসে, সে নিয়ে দৃষ্টি ছিল রাজনৈতিক অঙ্গনের। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বক্তব্য আসেনি।

যদিও দলের পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সাত দফা দাবি এবং ক্ষমতায় গেলে কী করবে বিএনপি ১২ দফা ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

তবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসান ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে। এ জন্য তারা জাতীয় ঐক্যমত গঠনের অঙ্গীকার করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে না দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা।

এদিকে এই সমাবেশেই বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজন নেতা শেখ হাসিনাকে কারাগারে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেন।

ফখরুলও বলেন, সারাদেশে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। আগামীতে এসব মামলা যদি মিথ্যা প্রমাণ হয়, তাহলে সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কেউ রক্ষা পাবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ভয় পেয়েছে, তারা রাতে স্বপ্নের মধ্যে খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া, বিএনপি, বিএনপি করছে।

সমাবেশে সাত দফা দাবি তুলে আগামী ৩ অক্টোবর সব জেলা শহরে এবং ৪ অক্টোবর মহানগরে সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার ঘোষণাও দেন মির্জা ফখরুল।

ফখরুল বলেন, সরকার যদি দাবি মেনে না নেয় তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। খালেদা জিয়ার ডাকে দেশবাসী এবং সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সরকার ভীষণ ভয়ে আছে। তারা এখন পদে পদে ষড়যন্ত্রের ভূত দেখতে শুরু করেছে।

তাদের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সরকার ভেঙে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার, ইভিএম বাতিল, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নতুন করে মামলা দেয়া বন্ধ করা।

বিএনপির এই জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রধান বক্তা দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর এতে সভাপতির ভাষণ দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।জনসভা শুরুর পর স্বাগত বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান। জনসভা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে