সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে মামলা করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) সভাপতি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। সোমবার বিকেলে নাজমুল হুদা নিজে থানায় গিয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
শাহবাগ থানার ওসি (পরিদর্শক) জাফর আলী বিশ্বাস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত ও আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হওয়ায় মামলাটি দুদকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী। ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন সিনহা সেজন্য তার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা নিজাম বলেন, আমার ল ফার্ম কাজ শুরু করেছে। সময় হলেই বিস্তারিত জানাব।
এ বিষয়ে নিজাম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনরা জানান, ওই ল ফার্মের আইনজীবীরা মামলার প্রেক্ষাপট যাচাই এবং ক্ষতিপূরণের অংক ঠিক করার জন্য আলোচনা শুরু করেছেন। সব প্রস্তুতি শেষ হলেই ফেডারেল কোর্টে আবেদন করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে আইন পেশায় থাকা অশোক কর্মকার বলেন, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নিজে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে মামলা করতে পারেন। এতে কোনো বাধা নেই। তবে মামলার আবেদনের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ থাকতে হবে। তাহলেই প্রতিকার পাওয়া যাবে।
২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে বসে বই লিখেছেন যা নিয়ে বাংলাদেশের মত প্রবাসে বাংলাদেশিদের মধ্যে কড়া আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বইতে সিনহা লিখেছেন, ২০১৭ সালে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে ঐতিহাসিক এক রায় দেওয়ার পর বর্তমান সরকার আমাকে পদত্যাগ করতে এবং নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে। শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ৬১০ পৃষ্ঠার ওই আত্মজীবনীমূলক বইটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
সিনহা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে প্যাটারসন সিটিতে বসবাস করছেন। মামলার বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার আত্মীয়দের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশভিত্তিক কোনো মিডিয়ার সঙ্গে তিনি কথা বলতে চান না।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে যে বাড়িতে তিনি থাকছেন, তার মালিকানা তার ভাইয়ের নামে হলেও অর্থের উৎস নিয়ে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। চলছে নানা বিতর্ক।