বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী দিনে আজ বাংলাদেশ-লাওস মুখোমুখি

সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ৫ম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে আজ সোমবার স্বাগতিক বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে লাওসের। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

এই ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে জেমি ডে বলেন, সাফে আমাদের ছেলেরা ভালো খেলেছে। তবে ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল না। তাই সাফে কি হয়েছে আমরা সেটি ভুলে যেতে চাই। এটি একটি নতুন টুর্নামেন্ট। আশা করছি ছেলেরা ভালো করবে।

সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ানশিপে দুই ম্যাচে জিতেও সেমিতে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সেই হতাশাকে কাটিয়ে উঠতে চায় লাল সবুজের বাংলাদেশ। এ লক্ষে দলের স্কোয়াডে কিছুটা পরিবর্তনও এসেছে। আর স্বাগতিক হিসেবে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসীও তারা।

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, স্বাগতিক হিসেবে আমরা ফেবারিট। দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় যোগ হওয়া এবং সাদের না থাকা দলের জন্য একটু ক্ষতির হলেও যারা বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দিয়েছেন তারা নিজেদের প্রমাণ করেই এসেছেন। আমাদেরকে জিততে হবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী।

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখলেও ‘ভালো কিছু করার’ চেষ্টা করবে লাওস। এমনটি জানিয়েছেন দলটির কোচ মাইক উন মুন হেন ও দলনেতা টিনি বোমালিয়া।

মাইক উন মুন হেন বলেন, স্বাগতিক হিসেবে ম্যাচে বাংলাদেশ ফেবারিট থাকবে। কারণ তারা দর্শকদের সমর্থন পাবে। তবে আমাদের দল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলবে এবং দারুণ লড়াই হবে।

তিনি আরও জানান, থাইল্যান্ড প্রিমিয়ার লিগে খেলার কারণে লাওস জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ তিনজন খেলোয়াড় দলের সাথে আসতে পারেননি। সেখান থেকে ছুটি না পাওয়ায় তারা এ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারছে না। তবে এ নিয়ে আমি চিন্তিত নই। খেলার পুরোটা সময় যে দল ভালো খেলবে তারাই ম্যাচ জিতবে।

ছয় জাতির এ টুর্নামেন্টে দুটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত খেলায় গ্রুপ ‘এ’-তে ফিলিস্তিন, নেপাল এবং তাজিকিস্তান, গ্রুপ ‘বি’-তে স্বাগতিক বাংলাদেশ, ফিলিপাইন এবং লাওস অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে গ্রুপ পর্বের সবকটি খেলা ১ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

সূচি অনুযায়ী উদ্বোধনী দিনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বাগতিক বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে লাওস। ২ অক্টোবর একই সময়ে নেপাল মুখোমুখি হবে তাজিকিস্তানের। এছাড়া ৩ অক্টোবর লাওস বনাম ফিলিপাইন, ৪ অক্টোবর তাজিকিস্তান বনাম ফিলিস্তিন, ৫ অক্টোবর ফিলিপাইন বনাম বাংলাদেশ ও ৬ অক্টোবর ফিলিস্তিন বনাম নেপালের মধ্যাকার খেলা অনুষ্ঠিত হবে।

তাছাড়া ৯ ও ১০ অক্টোবর কক্সবাজারে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে দুটি সেমিফাইনাল এবং ১২ অক্টোবর ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে সিলেটে সপ্তাহব্যাপী চলছে প্রচার-প্রচারণা। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টার। নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামও। মাইকিংও চলছে নগরজুড়ে।

আজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, এমপি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, এমপি ও উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, এমপি।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৫ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিলেটের মাঠে। এর আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যকার প্রীতি ম্যাচের মধ্য দিয়ে এ মাঠে আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেক ঘটে। ওই ম্যাচে সিলেটের দর্শকদের উন্মাদনায় মুগ্ধ হয়েছিল বাফুফে। যে কারণে পরের বছর তৃতীয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের সেমিফাইনালসহ চারটি ম্যাচ এখানে আয়োজন করা হয়।

ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে মাছরাঙা টেলিভিশন।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে