ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

সরকারের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষোদ্গার ও ‘নোংরামি’র বিরুদ্ধে লড়তে কাজে লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

universel cardiac hospital

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ফেইসবুকে ক্রিকেটার লিটন দাসের সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের শিকার হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তার জবাবে তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি প্রত্যেক দেশে বিরাট সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। সেখানে সামাজিক, পারিবারিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, পর্ন ইত্যাদি ছড়াচ্ছে। আমরা সে লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছি।

ক্রিকেটার লিটন দাস দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে দেবীর ছবিসহ একটি পোস্ট দেওয়া পর ফেইসবুকে ‘বাজে ও বিকৃত’ মন্তব্যের শিকার হন। পরে তিনি ওই পোস্ট সরিয়ে নেন। এ ধরনের পরিস্থিতি সামলাতে সরকার কী উদ্যোগ নেবে।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো মোকাবেলার জন্য আমরা সাইবার সিকিউরিটি আইন করেছি। এ ধরনের নোংরামি যেন না হয়।

দেশে মৌলবাদী দর্শনের বিস্তারের কারণেই হয়ত এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। এ বিষয়ে সরকার কী করবে? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, র‌্যাডিকাইলাইজেশন তো হচ্ছে। আমি বলব, যারা এ ধরনের কাজ করে তারা বিকৃতমনা। তাদের কোনো নীতি নাই। এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে সমাজকে সচেতন করে তোলার এবং সাংবাদিকদের তাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখার ওপর জোর দেন সরকারপ্রধান।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে বুধবার বিকেলে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বরাবরের মতই সংবাদ সম্মেলনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সরকারপ্রধান।

এবারের নিউ ইয়র্ক সফরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি সঙ্কট সামাল দিতে দূরদর্শী ভূমিকার জন্য নিউ ইয়র্কে ইন্টার প্রেস সার্ভিসের ‘ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের ‘স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ’ সম্মাননা দেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন শেখ হসিনা।

সাধারণ পরিষদে ভাষণের আগে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব ‘পূর্ণ সমর্থন ও সব ধরনের সহযোগিতার’ প্রতিশ্রুতি দেন।

ঢাকা থেকে ২১ সেপ্টেম্বর রওনা হয়ে দুদিন লন্ডনে কাটিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেদিন সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নেন তিনি।

নিউ ইয়র্কে সফরের দ্বিতীয় দিন ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে যোগ দিয়ে শেখ হাসিনা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানে তিনটি প্রস্তাব বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরেন।

সফরের মধ্যেই ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিউ ইয়র্কের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে একেবারেই ঘরোয়া পরিবেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালিত হয়। সফর শেষে ১ অক্টোবর সকালে দেশে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে