আজ শিথিল থাকবে শাহবাগের অবরোধ

ডেস্ক রিপোর্ট

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় রাজধানীর শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা যে অবরোধ অব্যাহত রেখেছে তা আজ শুক্রবার কয়েক ঘণ্টার জন্য শিথিল থাকবে।

জানা গেছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভোর ছয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত অবরোধ শিথিল রাখার কথা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

universel cardiac hospital

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতা মেহেদী হাসান বলেন, শুক্রবার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক আসবেন এই এলাকায়। অবরোধ রাখলে তাদের কষ্ট হবে।বরং ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রাস্তায় ভলান্টিয়ারি করবো। এরপর যথারীতি অবরোধ শুরু হবে।

কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মদিবসে নগরীর ব্যস্ততম মোড় দখল করে রাখায় যাতায়াতের ভোগান্তি চরমে উঠে। তবে পুলিশ অবরোধকারীদের প্রতি নমনীয়। তারা চারপাশে অবস্থান নিলেও কিছুই করছে না।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মুখে গত ১১ এপ্রিল সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সাড়ে পাঁচ মাস পর ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, প্রজ্ঞাপন দিয়ে আইন বা বিধি পরিবর্তন করা যায় না। এর জন্য অধ্যাদেশ জারি করতে হয়। আমাদের আন্দোলন চলবে।

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হওয়ার পরপর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় তারা। গভীর রাতেও তাদের অবস্থান অটল ছিল। পরদিন সকাল থেকেই মোড়ে চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে পুলিশ। ভেতরে অবস্থান চলতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেয় তারা।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অবরোধকারীরা ৩০ শতাংশ লিখে পাশে কোটা বহালের দাবিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

তাদের এই অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাংলামোটর হয়ে আসা যানবাহনগুলো বিকল্প পথে যেতে বাধ্য হয়। একইভাবে মৎস্য ভবনের দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো যেগুলো শাহবাগ হয়ে গন্তব্যে যেত, সেগুলোও বিকল্প পথ ধরতে বাধ্য হয়। এতে সেসব সড়কের যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

অবশ্য এসব ভোগান্তির প্রতি ভ্রুক্ষেপ নেই বিক্ষোভকারীদের। তাদের ছয়টি দাবির মধ্যে আছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিচার, সরকারি চাকরিতে পরীক্ষার শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা, কোটা আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বাসভবনে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি ইত্যাদি।

এদিকে, দাবি পূরণের লক্ষ্যে আগামীকাল শনিবার শাহবাগে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, এই সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সব সদস্য উপস্থিত থাকবে।

সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল ব্যাহত করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলেও এক্ষেত্রে নমনীয় কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তাদের পর্যবেক্ষণ করছি। সকাল থেকে তাদের অনেক বুঝিয়েছি। তারা কথা শোনেনি।

সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে আপনাদের কী নির্দেশনা-এমন প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কোনো নির্দেশনা নাই। আমরা শক্তি প্রয়োগ করে তাদেরকে উঠাইনি। কারণ, তারা বলবে, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা করে

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে