এ বছর শান্তিতে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের হাত থেকে পালিয়ে আসা ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ভুক্ত ২৫ বছরের নাদিয়া মুরাদ এবং কঙ্গোর স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডেনিস মাকওয়েজি।
আজ শুক্রবার নোবেল কমিটি এ ঘোষণা দেয়।
নোবেল কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে যৌন সহিংসতাকে ব্যবহারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ ডেনিস মাকওয়েজি ও নাদিয়া মুরাদকে ২০১৮ সালে শান্তিতে নোবেল পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই বিজয়ীই এ ধরণের যুদ্ধাপরাধের ওপর মনোযোগ আকর্ষণ ও লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
ডেনিস মাকওয়েজি জীবনের দীর্ঘ একটা সময় কঙ্গোতে যৌন সহিংসতার শিকার নারীদের সহযোগিতায় ব্যয় করেছেন। ২০০৮ সালে বুকাভুতে পানজি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর ডা. মাকয়েজি ও তার কর্মীরা যৌন সহিংসতার শিকার হাজার হাজার নারীর চিকিৎসা করেছেন। এই নারীদের অধিকাংশই কঙ্গোর দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধ চলাকালে সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
নাদিয়া মুরাদ প্রসঙ্গে নোবেল কমিটি বলেছে, নাদিয়া মুরাদ হচ্ছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি নিজের ওপর এবং অন্যদের ওপর চালানো নির্যাতনের কথা বলেছেন। নিজের দুর্দশা এবং দুর্দশার শিকার অন্যদের দুর্ভোগের কথা বলতে যেয়ে তিনি ব্যতিক্রমী সাহস দেখিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে আইএস জঙ্গিরা ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এই এলাকায় ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। আইএস জঙ্গিরা ওই এলাকায় নারীসহ হাজার হাজার মানুষকে অপহরণ ও হত্যা করে। এদের মধ্যে কোচো গ্রামের নাদিয়াও ছিলেন। আইএস জঙ্গিরা নাদিয়ার ছয় ভাইসহ গ্রামের সব পুরুষদের হত্যা করে এবং নারীদের নিয়ে যাওয়া হয় মসুল শহরে। আইএসের যৌনদাসী হিসেবে বেশ কিছুদিন থাকার পর পালিয়ে আসেন তিনি। আইএসের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ‘দ্য লাস্ট গার্ল’ শিরোনামে নাদিয়া একটি বই লিখেছেন। তিনি জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূতও হয়েছেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে নাদিয়া ও মাকওয়েজিকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে৷ পুরস্কার বাবদ ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ভাগ করে নিতে হবে তাদের দুজনকে।