রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। এজন্য করিমগঞ্জে বুধবার (নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজের অনুষ্ঠানে) যাচ্ছি। কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ মহাসড়কের পাশে জমির জন্য জায়গা দেখব।
দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া উপলক্ষে সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনদিনের সরকারি সফরে কিশোরগঞ্জ এসে তিনি প্রথম দিন তার প্রিয় বিদ্যাপীঠ এবং ছাত্র রাজনীতির কর্মকাণ্ডের অম্লমধুর স্মৃতি বিজড়িত কলেজ মাঠে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, এই যে, গুরুদয়াল কলেজ এ মাঠ থেকে আমার রাজনীতি শুরু যদিও স্কুলে থাকতে আমি রাজনীতি করেছি দুই বছর। আমার রাজনীতির নেতৃত্ব এই গুরুদয়াল কলেজ থেকে শুরু। ১৯৬১ সালে আমি মেট্রিক পাস করে গুরুদয়াল কলেজে ভর্তি হই। ৬১ সালে তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের ফটো ভাঙা দিয়ে শুরু করেছিলাম।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আরও বলেন, আমার রাজনীতির ৫৮ বছর হয়ে গেছে। এখানকার মানুষের কাছে আমি রাজনীতি শিখেছি। আমি প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করেছি।
তিনি বলেন, এই কিশোরগঞ্জবাসীর দোয়ায় আমার মতো একজন সাধারণ মানুষ বাংলাদেশের দুই দুইবার রাষ্ট্রপতি হয়েছি। এটা আমার বড় পাওয়া।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, আমি প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত পর সে সময় যে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল, সে সংবর্ধনায় আমার ছোট ভাই সৈয়দ আশরাফ উপস্থিত ছিল। আমার দুঃখ লাগে, সে আজ পাশে নাই। কারণ সে অসুস্থ। তবে আমি আশা করি এবং পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আপনারাও করবেন, সে যেনো অচিরেই আমাদের মাঝে ফিরে আসে। আবারো যেনো সে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।
রাজনৈতিক দলেগুলোকে উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা ভাল মানুষকে নমিনেশন দেবেন। লুটপাট যারা করে, মানুষের সঙ্গে বাহাদুরী দেখাবে, মানুষকে মানুষ মনে করবে না- এমন লোককে নমিনেশ দেয়া ঠিক হবে না।
এ সময় তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, সৎ মানুষ দেখে, ভাল ব্যবহার দেখে, মানুষের সুখে-দুখে যারা পাশে দাঁড়াবে- সেই ধরণের লোকজনকে আপনার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী রাশিদা হামিদ, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-আষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি পুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি দিলারা জামান, জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, রাষ্ট্রপতির মেঝ পুত্র রাসেল আহমেদ তুহিন প্রমুখ।