অপারেটর বদলের আবেদন প্রথম পাঁচ দিনে ১০,১২২ গ্রাহকের

ডেস্ক রিপোর্ট

মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) বা মোবাইল ফোনের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলের সেবা চালু হওয়ার পর প্রথম পাঁচ দিনে অপারেটর বদলের আবেদন করেছেন ১০ হাজার ১২২ জন গ্রাহক। এর মধ্যে সফল হয়েছেন চার হাজার ১৮১ জন গ্রাহক। আর আবেদন বাতিল হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৬২ জন গ্রাহকের। প্রক্রিয়াধীন আছে ৭৯টি আবেদন। সবচেয়ে বেশি বাধা এসেছে গ্রামীণফোনের কাছ থেকে। এরপরই রয়েছে বাংলালিংক, রবি ও টেলিটক।

এমএনপি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওয়া তথ্য নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিটিআরসির প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, প্রথম পাঁচ দিনে সবচেয়ে বেশি অপারেটর বদল করেছে গ্রমীণফোনের গ্রাহকরা। পাঁচ দিনে গ্রামীণফোনের মোট চার হাজার ৬১৬ জন গ্রাহক অপারেটর বদলের আবেদন করেছে। এর মধ্যে সফল হয়েছে এক হাজার ৮৩৪টি এবং বাতিল হয়েছে দুই হাজার ৭৮২টি।

গ্রামীণফোন থেকে সবচেয়ে বেশি গ্রহক গিয়েছে রবি আজিয়াটাতে। গ্রমীণফোন থেকে রবিতে মোট আবেদন এসেছে এক হাজার ৭৭০টি। এর মধ্যে সফল হয়েছে এক হাজার ৩৫৬টি এবং বাতিল হয়েছে ৪১৪টি।

গ্রামীণফোন থেকে বাংলালিংকে মোট আবেদন করেছে এক হাজার ২৪১টি। এর মধ্যে সফল হয়েছে ৪৫০টি এবং বাতিল হয়েছে ৭৯১টি। গ্রমীণফোন থেকে টেলিটকে আবেদন করেছে ৪৪ জন গ্রাহক। এর মধ্যে সফল হয়েছে ২৮টি এবং বাতিল হয়েছে ১৬টি।

সবচেয়ে কম অপারেটর বদল করেছে সরকারি অপারেটর টেলিটকের গ্রাহকরা। পাঁচ দিনে মোট ৭০৯ জন গ্রাহক অপারেটর বদলের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে সফল হয়েছে ১৩০টি এবং বাতিল হয়েছে ৫৭৯টি।

সবচেয়ে বেশি অপারেটর বদলের আবেদন পেয়েছে রবি। পাঁচ দিনে রবির কাছে মোট আবেদন এসেছে পাঁচ হাজার ৮৯১টি। এর মধ্যে সফল হয়েছে দুই হাজার ৩৪১টি এবং বাতিল হয়েছে তিন হাজার ৫৫০টি।

রবিতে গ্রামীণফোন থেকে এসেছে এক হাজার ৩৫৬ জন গ্রাহক, বাধাগ্রস্থ হয়েছে এক হাজার ৯৭৫ জন। বাংলালিংক থেকে এসেছে ৯২৬ জন গ্রাহক, বাধাগ্রস্থ হয়েছে এক হাজার ২৫৩ জন। টেলিটক থেকে এসেছে ৮২ জন গ্রাহক, বাধাগ্রস্থ হয়েছে ৩২২ জন।

গত ১ অক্টোবর এ সেবার পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক চালু হয়। এমএনপি সেবার লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ন টেলিটেক বিডি এ সেবা দিচ্ছে। সেবা গ্রহণের জন্য একজন গ্রাহককে সিম প্রতিস্থাপনের ১০০ টাকা চার্জসহ মোট ১৫৭ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হচ্ছে। নিয়ম অনুসারে, অপারেটর বদল বা পোর্টিং -এর সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৭২ ঘন্টা। একবার অপারেটর বদল করার পর আবারও অপারেটর বদল করতে কম পক্ষে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স প্রধান শাহেদ আলম এ বিষয়ে বলেন, গত ১ অক্টোবর থেকে এমএনপি সেবা চালু হওয়ার পর রবির শক্তিশালী ৪.৫জি নেটওয়ার্কে আসতে ইচ্ছুক গ্রাহকের সংখ্যাই বেশি এবং এর জন্য আমরা আমাদের গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানাই। যদিও এমএনপি সেবায় এখনো সেভাবে গ্রাহক সাড়া পাওয়া যায়নি। সেবাটি নিতে গ্রাহকদের আগ্রহী করে তুলতে প্রচারণা আরও বাড়ানো দরকার। এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ৫০ শতাংশ আগ্রহী গ্রাহক নানা কারণে এমএনপি সেবার মাধ্যমে অপারেটর পরিবর্তন করতে পারেন নি। যে সব কারণে গ্রাহকেরা অপারেটররা এমএনপি সেবা নিতে পারছেন না সেগুলো দূর করতে আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।

ইনফোজিলিয়ন টেলিটেক বিডি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লে, কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার এমএনপি সেবার পরিস্থিতি সম্পর্কে আজ কালের কণ্ঠকে বলেন, পর্যাপ্ত প্রচার না থাকায় এখন পর্যন্ত অনেক গ্রাহক এ সেবা সম্পর্কে জানেন না। তবে যারা এ বিষয়ে আগে থেকেই সচেতন ছিলেন এবং সেবাটি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তারা আবেদন করছেন। সেবা শুরু হওয়ার পর আজ পর্যন্ত কর্মদিবস ছিল ৭টি। এই ৭ কর্মদিবসে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার আবেদন এসেছে। এর মধ্যে পোর্টিং হয়েছে ৪৫ শতাংশ। যাদের ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নেওয়া আছে, সিম কেনার পর ৯০ দিন পার হয়নি- এ ধরণের আরো কিছু অবস্থার ক্ষেত্রে আবেদন বাতিল হয়ে যাচ্ছে। বিটিআরসি বাতিলের শর্তগুলো নিয়ে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত এ বিষয়ে সংশোধিত একটি নির্দেশনা জারি হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই এ সেবার চাহিদা বাড়ছে এবং সেবার মানও উন্নত হচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে