একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মতো ব্যস্ত সময় পার করছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এবার সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কমিশন। আর সেটি হলো নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্টকেও প্রশিক্ষণ দেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আমাদের যাবতীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কিভাবে দেব সেটি নির্ধারিত করেছি। বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা ১২টি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করবো। এরমধ্যে একটি বিষয় নতুন আছে সেটি হলো অতীতের কোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদেরকে কখনো কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পোলিং এজেন্টদেরকে আমরা প্রশিক্ষণ দেব।
তিনি বলেন, আমরা নিবন্ধিত প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে ৭ জনের নাম চাইব। ৭ জন করে প্রতিনিধি পাঠালে তাদেরকে আমরা এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেব যাতে পরে উনারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে নিজস্ব দলের পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ তফসিল ঘোষণার আগেই অক্টোবরের মধ্যেই কেন্দ্রিয় ভাবে দেয়া হবে।
একইভাবে তফসিল ঘোষণার পর আমরা মাঠপর্যায়েও প্রতি প্রার্থীর ৭ জন করে প্রায় ৮ হাজার পোলিং এজেন্টকে প্রশিক্ষণ দেব। যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠপর্যায়ে তাদের অন্যান্য পোলিং এজেন্টদেরকে প্রশিক্ষণ দেবেন যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার পর আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও প্রশিক্ষণ দেব। এর বাইরেও সারাদেশের প্রায় আট লাখ নির্বাচনী কর্মকর্তাকে অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেব। এগুলো নির্বাচনের ৫ থেকে ১০ দিন আগে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হবে।
ইএমএস, সিএমএস ও আরএমএসএসবের সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্পৃক্ত থাকবেন তাদেরকেও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ৬০০ কর্মকর্তাকে সকল সাচিবিক দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এর বাইরে আমরা ইভিএমের প্রশিক্ষণ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ১২টি ব্যাচে ৩০০ এর বেশি নিজস্ব কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ২৪ ব্যাচে আমাদের এ প্রশিক্ষণ কর্যক্রম শেষ হবে। আমাদের মাঠপর্যায়ের ১৫০ কর্মকর্তাকে আমরা ইভিএমের উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত করে মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এতে নতুন কোনো দল নিবন্ধন পায়নি। নিবন্ধন দেয়া হয়েছে ১১৯টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকে।
ইসির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন। এসময় সীমার মধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী চূড়ান্ত না হওয়ায় ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিমালা চূড়ান্ত ও নির্বাচনী ম্যানুয়েল তৈরি করতে পারছে না কমিশন।