প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে আজ রোববার সেতু এলাকায় যাচ্ছেন।
এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী আজ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় যাবেন।
গতকাল শনিবার তার পদ্মাপারে যাওয়ার কথা থাকলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তা একদিন পেছানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুই পারে এখন সাজ সাজ রব।
বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে মাওয়ায় কাজের অগ্রগতি দেখবেন। এরপর ঢাকা-মাওয়া ও পাচ্চর-ভাঙ্গা এন ৮ মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি দেখবেন, এরপর মাওয়া সাইডে রেললাইন লিংকের কাজের উদ্বোধন করবেন।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে মাওয়া থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেললাইন জাজিরা, শিবচর, ভাঙ্গা জংশন হয়ে বিদ্যমান ভাঙ্গা স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত হবে।
এতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোর জেলা সংযুক্ত হবে।
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। ঢাকা হতে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, যশোর, খুলনা ও দর্শনার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত রুটে উন্নততর রেল যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে।
এ রুটে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্রডগেজ মালবাহী ও কন্টেইনার ট্রেন চলবে। এটি বাংলাদেশের মধ্যে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট হবে। ভবিষ্যতে এ রুটে দ্বিতীয় লাইন নির্মাণ এবং বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরকে এই রুটের সঙ্গে সংযুক্তকরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জিটুজি পদ্ধতিতে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড নামক চীন সরকারের মনোনীত ঠিকাদার এই প্রকল্পের কাজ করছে। চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২ হাজার ৬৬৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২৩ কিলোমিটার এলিভেটেড ভায়াডাক্টে ব্যালাস্টবিহীন রেললাইন নির্মাণ প্রবর্তন করা হচ্ছে, যা একটি নতুন প্রযুক্তি। এলিভেটেড ভায়াডাক্টের ওপর ২টি প্ল্যাটফর্ম, ১টি মেইন লাইন ও ২টি লুপ লাইনসহ রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ ও তাতে লিফট স্থাপন করা হবে। প্রায় ১১ মিটার উঁচু রেল লাইনের নিচ দিয়ে সড়কের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণের মাধ্যমে উভয় পথে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ ট্রেন এবং গাড়ি চলাচল নিশ্চিত করা হবে।