২০ জনের ফাঁসি ও ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে ২১ আগস্ট ২০০৪ সনের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। এই রায় তিনি নানাজন নানা কথা বলেছেন ও বলছেন। কিন্তু সেদিনের ঘটনার নৃশংসতা, নির্মমতা আর নিষ্ঠুরতার বিষয়ে কোন দ্বিমত নেই। মামলাটিকে মূল ঘটনাবলি থেকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার তদানিন্তন শাসক দলীয় ( বিএনপি-জামায়াত সরকার তথা ২০ দলীয় সরকার) অপচেষ্টার বিষয়েও কোন দ্বিমত নেই।
তবে কেউ কেউ মামলার আসামি তালিকাভুক্তদের অবস্থান নিয়ে অথবা শাস্তির মাত্রা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনের প্রয়াস পাচ্ছেন। আর এটা হতেই পারে। যতক্ষণ না সর্বোচ্চ আদালতের রায় পাওয়া যায় বা আপীলাত আদলতের রায় না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত রায়ের বিষয়ে দ্বিমত ও মতদ্বৈততা থাকতেই পারে। এতে আপত্তির কোন কারণ নেই।
কিন্তু এ ধরনের একটি জঘন্য হামলায় মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার বিশ্লেষণ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধ যত বড় রা ক্ষুদ্রই হোক না কেন, সংগঠনের ক্ষেত্রে যারা বা যিনি জড়িত তিনি যে অপরাধী এতে কোন প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। আর অপরাধীর বিচার তো আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদালতেই হবে। জনতার আদালতে বা ভোটের আদালতে অপরাধীর বিচার হয় না।
অতএব, রায় নিয়ে রাজনীতিকরণের প্রয়াস শুধুই অপপ্রয়াস। যদি কেউ সত্যিই অপরাধী না হয়ে থাকেন, উচ্চতর আদালত থেকে তিনি খালাস পাবেন, এটাই আইনের বিধান। এমনকি কেউ খালাস পেলে অথবা কম শাস্তি পেয়ে থাকলে উচ্চতর আদালত খালাসকৃত শাস্তির আওতায় বা শাস্তিপ্রাপ্ত জনের শাস্তি কম বেশীও করতে পারেন। অপরাধের বিচার আইনের আওতায়ই হওয়া উচিত। অন্তত মুখে হলেও যারা আইনের শাসনে আস্থার কথা উচ্চারণ করেন, তাদের তো অন্য কথা মুখে মানায় না।
সুতরাং আসুন আমরা যারা আইনের শাসনে আর গণতান্ত্রিক জীবন বিধানে আস্থাবান, তাঁরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সোচ্চার হই। গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে সে দৃষ্টিকোণ থেকেই বিচার করা উচিত।
লেখক : সংসদ সদস্য, সম্পাদক, মত ও পথ