২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই দেশে চালু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট)।
পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর থেকেই এই সেবা চালু হবে। এরই মধ্যে মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি দেশবাসীকে জানানো হয়েছে। তবে প্রথম দফায় পাঠানো ক্ষুদে বার্তায় ভুল ছিল বলে জানিয়েছে পাসপোর্ট অফিস।
এ বিষয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, কয়েক দিন আগে প্রথম দফায় এই বিষয়ে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। সেখানে ভুলবশত বলা হয়েছে, ‘২০২৮ সালের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে ই-পাসপোর্ট। ঘরে বসে আবেদন নির্ভুল পাসপোর্ট।’
সরকারি এই তথ্য বিরণীটি ভুল ছিল জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, সোমবার (গতকাল) এই ভুল সংশোধন করে পুনরায় তথ্য বিবরণী পাঠানো হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের মধ্যে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হবে।
বেশ কয়েক বছর থেকেই দেশে ই-পাসপোর্ট সেবা চালুর কথা শোনা যাচ্ছিল। এ নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অবশেষে সেবাটি ডিসেম্বরে চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সেবা চালু হলে বাংলাদেশ ঢুকবে নতুন যুগে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই পাসপোর্টের একটি ‘চিপ’ সহজ করে দেবে বিশ্বভ্রমণ।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ই-পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট চালু রয়েছে বিশ্বের ১১৮টি দেশে। ১১৯ নম্বর দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্টের যুগে ঢুকে পড়া এগিয়ে রাখবে বাংলাদেশকে। নিরাপত্তা চিহ্ন হিসেবে ই-পাসপোর্টে থাকবে চোখের মণির ছবি ও আঙুলের ছাপ। আর এর পাতায় থাকা চিপসে সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য। ফলে কঠিন হবে পরিচয় গোপন করা।
বর্তমানে দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) মালিক। প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার মানুষ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছে। সময়মতো পাসপোর্ট দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে পাসপোর্ট অফিসগুলো। ২০১০ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) চালু হওয়ার সময় যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছিল সেগুলো দিয়েই এখনো কাজ চলছে। এসব যন্ত্রের অধিকাংশ বিকল। এক যন্ত্রের পার্টস অন্য যন্ত্রে বসিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে কাজ।
২০১৬ সালে এমআরপির পাশাপাশি ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একই সময় পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে দিন থেকে ই-পাসপোর্ট চালু হবে সেদিন থেকে এমআরপি পাসপোর্ট রিনিউ করতে গেলে ই-পাসপোর্ট করতে হবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডাসহ ১১৮টি দেশে ই-পাসপোর্ট চালু আছে। বর্তমানে সাধারণ ও জরুরি পাসপোর্ট করতে যথাক্রমে তিন হাজার ও ছয় হাজার টাকা ফি দিতে হয়। মেয়াদ ৫ বছর।