নির্বাচনকে সামনে রেখে ভেঙে গেল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপি।
আজ মঙ্গলবার বিকালে গুলশানের ইমানুয়েল’স ব্যাংকুয়েট হলে বিকাল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
এ সময় দল দুটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, বিএনপি নেতৃত্বে ৪ দলীয় জোটকে সম্প্রসারণ করে ১৮ দলীয় জোটে রূপান্তর হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) এ জোটের অংশীদার।
তারা জানায়, বিএনপি জোটের শরিক হিসেবে আমরা সাধ্যমতো অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। নিজেদের মতবিরোধী ও মতাপার্থক্য থাকলেও জোটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সব সময় আন্তরিক ছিলাম।
গাণি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে নানা ধরনের লোভনীয় প্রস্তাব থাকার পরেও জোটের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো কেউ তৎকালীন ১৮ দলীয় জোট ছাড়েনি। কিন্তু এই ত্যাগকে বিএনপি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে কোনো মূল্যায়ন করেনি। বরং তাদের ভাবখানা ছিল এমন যে আমরা যাব কোথায়?
তিনি বলেন, সোমবার ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও বিএনপির উপস্থিত নেতৃত্ব বলেছেন, তাদের ওপর আজকের এই ঝড় কেবল ২০ দলীয় জোটের কারণেই হয়েছে। এই জোট না থাকলে তারা জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকত না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের কারণে কেউ চাপে থাকুক, তা আমরা প্রত্যাশা করি না। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে যে এই দলগুলো তাদের পাশে ছিল বলেই অনেক ব্যর্থতার ভাগ তারা শেয়ার করতে পেরেছে। না থাকলে তাও পারত না।
জেবেল গাণি বলেন, ন্যাপ ও এনডিপি সাংবিধানিক ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে। শুধু ক্ষমতার পালা বদলের নামে কোনো অশুভ শক্তির ক্ষমতা গ্রহণ করে ফের দেশকে রাজনীতিশূন্য করার কোনো অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করুক, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা তা প্রত্যাশা করি না। বিএনপি সব সময় তার শরিকদের অন্ধকারে রাখার অপচেষ্টা করে গেছে। জাতীয় নির্বাচন কাছাকাছি হলেও সে বিষয়ে বিএনপি তার অবস্থা শরিকদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করছে না।
তিনি বলেন, এমনকি বিভিন্ন বৈঠকে জোট শরিকদের মনোনয়নের বিষয়টি সামনে আনতে চাইলেও বিএনপি কৌশলে তা এড়িয়ে যায়। আর ১/১১ কুশীলব, মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নকারীরা যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নামে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, তখন আমরা মনে করি, বিএনপি তার সব নৈতিক অবস্থা থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাপ আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি সাংবিধানিক, নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির স্বার্থে আজ এই মুহূর্ত থেকে জোটের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।