সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় গেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বি চৌধুরীর বারিধারার বাসভবনে যান তিনি। এ সময় বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাদ দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণা দেয়া ভুল হয়েছে জানিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ১৩ অক্টোবর বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়েই বিএনপি, কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে গঠন হয় ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’।
সেদিনই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান বি. চৌধুরী। বলেন, এটি বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার উদ্যোগ। কিন্তু রাজনীতিতে ভারসাম্য আনতে এবং স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে বাদ দিতে যে চেষ্টা ছিল তার, সেটি হয়নি।
মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বি চৌধুরীর ছেলে মাহী বি চৌধুরী সরাসরি বলেন, আপনারা দেশবিরোধী চক্রান্তের ফাঁদে পড়েছেন। মান্নাও বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণাপত্র পাঠ করার আগে তার আরও ভাবা উচিত ছিল।
এই আলোচনার মধ্যেই সোমবার রাতে বি চৌধুরীর বারিধারার বাসায় যান এই ঐক্যের আলোচনায় মধ্যস্ততা করা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। কেউ বাদ দেওয়া হবে না। ওইদিন আমাদের ভুল হয়েছে। এই জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এর আগে রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বি. চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেন জাফরুল্লাহ। এ সময় বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নানও উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে জাফরুল্লাহ বলেন, আগে যারা ছিল সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। সাবেক রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়ে কিছু যায় নাকি? আমি সবাইকে নিয়ে ঐক্য করতে চাই।
জাফরুল্লাহ চলে আসার পর মাহী বি. চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী ও দলের মহাসচিব মেজর (অব) মান্নানের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমিও কিছুক্ষণ ছিলাম সেখানে। ১৩ অক্টোবরের ঘটনার জন্য ডা. জাফরুল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, বি চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বাসায় থাকেননি, এটা সঠিক হয়নি। এই কথাটিই তিনি বলতে এসেছেন।
প্রসঙ্গত, ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাখা হয়নি। এ নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে বারিধারায় নিজ বাসভবনে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, নতুন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যেতে আগ্রহী। তবে দুটি শর্ত রয়েছে তার।
বি. চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে ঐক্য প্রক্রিয়া চলছে তার সঙ্গে বিকল্পধারা থাকবে না। এ ছাড়া সংসদে ভারসাম্য এবং স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে নিজ দলের জন্য ১৫০ আসন দাবি করেন তিনি।
সেদিন সাংবাদিকরা জানতে চান বিকল্পধারাকে কি বাদ দিয়েছে, নাকি তারা সরে এসেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহী বি চৌধুরী বলেছিলেন, আমরা ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে এখনও সরে আসি নাই। ওনারা যদি বাদ দিয়ে থাকেন সেটা তারা ঘোষণা দেবেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের বাদ দিয়ে ভারসাম্যের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী। এমনটা জাতির চাওয়া, সেই স্বপ্ন আমরা দেখি।