যৌন হয়রানির বিষয়ে যারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ইউরোপের পার্লামেন্টেও এমন হয়রানির শিকার নারীরা।
এমন সহিংসতার শিকার সবচেয়ে বেশি হয়েছেন ৪০ বা তার চেয়ে কম বয়সি নারীরা৷ পার্লামেন্ট কর্মীদের ৪৯ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে হয়রানির কথা বলছেন৷ এসব হয়রানির ৭০ ভাগই সংগঠিত হয়েছে পুরুষ রাজনীতিবিদদের দ্বারা৷
এক গবেষণায় জানা গেছে, ইউরোপের প্রায় অর্ধেক নারী রাজনীতিবিদ ও পার্লামেন্টের নারী সদস্যই সহিংসতার শিকার হয়েছেন৷ এসব ঘটনায় নারীরা যাতে নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারেন, তেমন ব্যবস্থাও নেই ইউরোপের অধিকাংশ পার্লামেন্টে৷ খবর ডয়চে ভেলের।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সাংসদদের অফিসে ব্যবহৃত কনডম প্রতিনিয়ত পরিস্কারে অনীহা জানিয়েছিল সেখানকার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এবার জানা গেলো ইউরোপের পার্লামেন্টে বেশিরভাগ নারীই যৌন হয়রানির শিকার। এসব অন্যায় কাজ নিয়ে যাদেরকে বেশি সরব দেখা যায় তাদের এমন দুর্দশার চিত্র সামনে এসেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারী রাজনীতিবিদ ও পার্লামেন্টের নারী সদস্যরা হত্যা, নির্যাতন, এমনকি ধর্ষণের হুমকিও পেয়ে থাকেন৷ সন্তানকে অপহরণ ও হত্যার হুমকি পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন অনেকে৷
ইউরোপীয় কাউন্সিলের পার্লামেন্টারি অ্যাসেম্বলি এবং স্বতন্ত্র সদস্যদের সংগঠন ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন এই তথ্য প্রকাশ করেছে৷
গবেষণায় অংশ নেয়া নারীদের ৮৫ শতাংশ বলছেন, তারা মানসিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন৷ মোট ৬৮ শতাংশ বলছেন, নারী হওয়ার কারণে তাদের বিভিন্ন আক্রমণাত্মক কথা শুনতে হয়েছে৷ ২৫ শতাংশ সরাসরি যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন৷
ইউরোপের ৪৫টি দেশের পার্লামেন্ট থেকে মোট ১২৩ জন (৮১ জন এমপি ও ৪২ জন কর্মী) এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন৷
ইউরোপের বেশিরভাগ পার্লামেন্টে এ ধরনের হয়রানির ঘটনায় নারীদের সাহায্য চাওয়া বা বিচার প্রার্থনার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই৷ ফলে হয়রানি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন পুরুষ এমপিরা৷
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট গাব্রিয়েলা কুয়েভাস জানান, গবেষণার এই ফল দেখিয়ে দিয়েছে পার্লামেন্টে নারীর প্রতি সহিংসতা আমরা যেমন ভাবতাম, তার চেয়েও বেশি খারাপ৷ এটি শুধু নারী অধিকারের চরম লঙ্ঘনই নয়, গণতন্ত্রের জন্যও ক্ষতিকর৷