ফাদার মারিনো রিগন বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। সেই মতো, মৃত্যুর এক বছর পর জন্মভূমি ইতালি থেকে তার মরদেহ শুক্রবার সকালে বিশেষ বিমানে ঢাকায় আনা হয়।
আজ রোববার দুপুরে মোংলার সাধুপালের ক্যাথলিক মিশনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হবে।
সূত্র জানায়, মাত্র ২৮ বছর বয়সে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের ব্রত নিয়ে ১৯৫৩ সালে ৭ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানে আসেন মারিনো রিগন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের পাশে দাঁড়ান তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা, আশ্রয় ও সেবা দেয়ার পাশাপাশি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এরপর মোংলায় ক্যাথলিক গির্জায় পুরোহিতের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এ অঞ্চলের মানুষদের উন্নত জাতি গঠনের। তিনি বাংলা ভাষায় লিখেছেন ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, সাড়ে তিনশ’ গান।
বাংলাদেশের মোংলার ক্যাথলিক মিশনে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে ফাদার রিগনকে তার পরিবার ইতালি নিয়ে যায়। ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ৯৩ বছর বয়সে জন্মস্থান ইতালির ভিল্লাভেরলা গ্রামে মারা যান তিনি। ২৪ অক্টোবর গ্রামেরই ক্যাথলিক গির্জায় শেষকৃত্য হয়। এ সময় তার কফিন ঢেকে দেয়া হয়েছিল লাল-সবুজ পতাকায়। দীর্ঘ এক বছর পর শেষইচ্ছা অনুযায়ী আজ তাকে মোংলার ক্যাথলিক মিশনে আনা হচ্ছে। এখানে তার শেষ সমাধি হবে। তার আগমনকে ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি।
মোংলার সেন্ট পলস সাধুপাল ক্যাথলিক মিশনের ইনচার্জ ধর্মযাজক ফাদার সিরাফিন জানান, ইতালিতে শেষকৃত্যের পর রিগনের দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়। শেষইচ্ছা অনুযায়ী দীর্ঘদিন পর মোংলায় এনে সমাহিত করা হচ্ছে।
ফাদার মারিনো রিগন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবি-লেখকদের প্রায় ৭০টি বই ইতালির ভাষায় অনুবাদ করেছেন। লিখেছেন বেশ কটি মৌলিক বইও। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য রিগনকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা এবং নাগরিকত্ব দেয়া হয়। তিনি ইতালীয় পরিচয় রেখে বাংলাদেশি পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করতেন।