২০২০-২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মুজিব বর্ষের মধ্যেই বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত দেশ।
আজ শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মাণাধীন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামের পুনর্বাসন পল্লি উদ্বোধনসহ বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর ও ফলক উম্মোচনকালে সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্ম শত বার্ষিকী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ। আর ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি। তাই এই ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্তকে আমার মুজিব বর্ষ ঘোষণা করেছি। মুজিব বর্ষের মধ্যে আমাদের বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত। বাংলাদেশের কোনো মানুষের কোনো কষ্ট থাকবে না। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে এদেশের সন্তানরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চল ছিল সবসময়ই অবহেলিত। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ শুরু করি। এরপর টানা দুইবার প্রায় ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে এ অঞ্চলের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করি। বিশেষ করে যোগাযোগব্যবস্থাকে উন্নতি করি। বরিশালের দোয়ারিকা-শিকারপুর থেকে শুরু করে গাফ খান হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রতিটি নদীর ওপর দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ কাজ একমাত্র আমরাই করেছি। নদীপথের ড্রেইজিং ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ অঞ্চলের শুধু ঘরে ঘরেই নয়, ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। তাই পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এটিকে আরো ৩০ হাজার মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া রয়েছে। সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যেকোনো একটি দ্বীপে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ সরকার হাতে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উন্নয়ন কিংবা শিল্প কারখানা স্থাপনের ফলে যাতে কারো ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখছে সরকার। যারা এই সকল শিল্পকারখানা তৈরিতে জমি দিচ্ছেন তাদের কাছ থেকে জমি তিন গুণ মূল্যে ক্রয় করা হচ্ছে। আবার তারা যেন গৃহহীন হয়ে না পড়েন, তার জন্য ‘স্বপ্নের ঠিকানা’র মতো পুনর্বাসন পল্লি নির্মাণ করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার।
তিনি বলেন, পায়রায় বন্দর কিংবা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, এখানে হবে নৌঘাঁটি। সেনানিবাস হয়েছে। আর পদ্মার এপারে হবে বিমান ঘাঁটি। আগামীতে আমরা ক্ষমতায় আসলে এমন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
সুধী সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামের পুনর্বাসন পল্লি উদ্বোধনসহ ২১ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর ও ফলক উম্মোচন করেন।
সুধী সমাবেশে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, তালুকদার মো. ইউনুস, জেবুন্নেছা আফরোজসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বিকেলে তিনি বরগুনার তালতলী উপজেলায় আয়োজিত জনসভায় যোগদানসহ বরগুনায় আরো ২১টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর ও ফলক উম্মোচন করবেন।