জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৭ দফা দাবি এবং ১১টি লক্ষ্য সংবলিত চিঠি দিয়েছে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফীকুল্লাহ চিঠি পৌঁছে দেন।
চিঠিটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও সদস্য এস এম কামাল হোসেন।
রোববার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রবেশ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতা। এরপর পৌনে ৭টার দিকে তারা চিঠি হস্তান্তর করেন। বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য এম জগলুল হায়দার আফ্রিক।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়েছি। দলটির দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপের কাছে তা পৌঁছে দিয়েছি। আমরা সাত দফা ও ১১টি লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসতে চাই। আমাদের সাত দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্যের আলোকে সংলাপের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করবো সমস্যা সমাধান করার।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, চিঠিতে কী আছে আমরা এখনও খুলে দেখিনি। আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কার্যালয়ে আসছেন। এরপর আমরা বসে চিঠির বিস্তারিত জানতে পারব। সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে চিঠির বিষয়বস্তুর বিষয়ে আপনাদের অবহিত করতে পারব। আমি তাদের চিঠি গ্রহণ করেছি এবং তাদেরও চিঠি গ্রহণের রিসিট কপি দিয়েছি।
চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণভবন, ঢাকা। বাংলাদেশ।
প্রিয় মহোদয়
শুভেচ্ছা নেবেন
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা।
যেসব মহান আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত ও আত্মত্যাগের উদ্বুদ্ধ করেছিল -তার অন্যতম হচ্ছে ‘গণতন্ত্র।’ গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে এবং জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে- রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে-এটাই আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার।
আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। ‘ব্যক্তির এক ভোট’ এর বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুই নিশ্চিত করেছেন-যা রক্ষা করা আমাদের সকলের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারসমূহ আদায়ের মূলশক্তিতে পরিণত করে-তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন-রাজনীতি কীভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তাও আমাদের অজানা নয়। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণ ঘটানো আজ আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে -জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে এবং সে লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।
আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
বিঃ দ্রঃ অত্রসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও এর সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য সংযুক্ত করা গেল।
ধন্যবাদান্তে
ড. কামাল হোসেন