জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য রয়েছে।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরানো কারাগারের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার পঞ্চম বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।
তবে আজ রায় ঘোষণা করা হবে কি না তা নির্ভর করছে আপিল বিভাগের আদেশের ওপর। কারণ, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলার বিচার চলবে কি না, সে বিষয়ে করা আপিলের আদেশ দেওয়ার জন্যও সোমবার দিন ধার্য রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের আপিল বিভাগের পুর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রোববার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সোমবার রায়ের জন্য দিন ধার্য রাখেন। সে হিসেবে আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় মামলাটি রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, যদি এ মামলায় আপিল বিভাগে কোনো রকম লিভ দেওয়া হয়, তাহলে বিচারিক আদালতের মামলার রায় প্রদান অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আর যদি খালেদা জিয়ার আবেদনটি আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায় তবে রায় দেওয়া সম্ভব হবে।
এ মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিচারিক আদালতে আসতে অনীহা প্রকাশ করায় তার অনুপস্থিতিতে গত ১৬ অক্টোবর রায়ের জন্য এ দিন নির্ধারন করেন বিচারক। এর আগে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলা চলতে বাধা নেই বলে গত ১৪ অক্টোবর আদেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা লিভ টু আপিল করেন।
শুনানির পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, তাদের প্রত্যাশা-সর্বোচ্চ আদালতে সুবিচার পাবেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের মতো আপিল বিভাগেও এটি খারিজ হবে।
এ মামলায় খালেদা জিয়া প্রধান আসামি হলেও রায়ে তিনি ফের দণ্ডিত হবেন না খালাস পাবেন; এ আলোচনা সর্বত্র। সবার দৃষ্টি আদালতে।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতির মামলার রায়ে খালেদা জিয়া ৫ বছর সাজাপ্রাপ্ত হন। খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় সম্প্রতি তাকে পুরানো ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ মামলায় সর্বোচ্চ সাত বছর সাজা হতে পারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।
জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতির মামলাটি করা হয়েছিল আট বছর আগে। ২০১০ সালের ৮ আগষ্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক হারন-অর রশীদ।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্রের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় অপর তিন আসামি হলেন-খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এর মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এই মামলার কয়েকটি ধার্য তারিখে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেনি।
শুনানির পর রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র মামলা শুনানির সময় খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রায় ৪০ বার সময় নেওয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি আদালতে আসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় আদালত তো বসে থাকতে পারে না। আদালতকে তো নিশ্চিত বিচার কার্যক্রমটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই হিসেবে আমি আশাবাদী বিচারিক আদালত মামলাটির বিচার শেষ করতে পারবে।