ধর্মের অবমাননা এবং মহানবীকে কটুক্তি করার অভিযগ ছিল তার বিরুদ্ধে। হয়েছিল কারাবাস। অবশেষে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে মিলল মুক্তি।
আলোচিত ব্যক্তির নাম আসিয়া বিবি। যাকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলেছিল পাকিস্তানে। বুধবার তাকে বেকসুর খালাস বলে ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত।
পাক পাঞ্জাবের সেখপুরা জেলার এক খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ছোট গ্রামে জন্ম হয় আসিয়া বিবির। লাহোর শহর থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩০ মাইল। লাহোর আদালত থেকেই শুরু হয়েছিল তার আইনি লড়াই।
ঘটনার সূত্রপাত ২০০৯ সালের জুন মাসে। আসিয়া বিবি নামের এক পাক ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী মহিলা নাকি ধর্মের অবমাননা করেছেন। অমুসলিম হয়েও প্রতিবেশী মুসলিমের গ্লাস থেকে জল খেয়েছিলেন আসিয়া বিবি। প্রবল তৃষ্ণায় সেই প্রতিবেশীর নিষেধ অমান্য করেই পান করে ফেলেছিলেন গ্লাসের জল।
ব্যাস এই টুকুই, এতেই নাকি হয়ে গিয়েছে ইসলাম ধর্মের অবমাননা। অসম্মান করা হয়েছে মহম্মদের নির্দেশকে। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশিদের সঙ্গে বচসার সময় নাকি মহানবীকে অসম্মান করেছেন আসিয়া বিবি। এমন অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
সেই কারণে ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে আসিয়া বিবি-কে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় লাহোরের আদালত। সেই সময় থেকেই জেলেই রয়েছেন আসিয়া বিবি। যদিও ক্ষমা চেয়ে মুক্তির জন্য পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল অভিযুক্ত আসিয়া বিবি। যার শুনানি চলেছে দীর্ঘদিন ধরে।
বুধবার সেই মামলার চূড়ান্ত রায় সামনে এসেছে। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার, আসিফ সাইদ খোসা ও মাজহার আলম খান মিয়ানখেল আসিয়া বিবিকে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে বেজায় খুশি আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফুল মুলুক। তিনি বলেছেন, “আজ আমার জীবনের অন্যতম সুখের দিন। এই রায় প্রমাণ করে দিয়েছে যে পাকিস্তানের দরিদ্র এবং সংখ্যালঘু মানুষেরা সমস্যায় থাকলে আদালতে বিচার পান।”