পুঁজিবাজারে সংলাপের সুবাতাস

ডেস্ক রিপোর্ট

দেশের রাজনীতিতে সরকারি ও বিরোধী দলগুলোর সংলাপ আয়োজনের প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারেও। নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের ‘কড়া’ অবস্থান থেকে সরে এসে সংলাপ আয়োজনে স্বস্তিতে ফিরেছে পুঁজিবাজার।

নির্বাচনকে ঘিরে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও গতকাল মঙ্গলবার পুঁজিবাজারের চিত্র ছিল ঠিক উল্টো। শেয়ার কেনার চাপে সূচক ও লেনদেন উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিরোধী দলগুলোর কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করলে পুঁজিবাজারে আতঙ্ক ছড়ায়। নির্বাচনকে ঘিরে সরকার কড়া অবস্থানে থাকবে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়। যার জন্য বাজার পর্যবেক্ষণে অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে। এতে বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে।

তবে রাজনৈতিক সংলাপ আয়োজনের ঘোষণায় অনেকটাই স্বস্তিতে ফিরেছে বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রির অর্থে মূলধনী মুনাফায় ১০ শতাংশ কর ছাড়ের অনুমোদনও পেয়েছে ব্রোকার্সরা। এতে নতুন করে এক হাজার কোটি টাকার মূলধন ঢুকবে পুঁজিবাজারে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে সংলাপ আয়োজনের সুবাতাসের মতোই পুঁজিবাজারেও সুবাতাস বইছে বলে মনে করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউসগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক।
তিনি মত ও পথকে বলেন, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে সংলাপ আয়োজনে সেই ভীতি ও আতঙ্ক কেটেছে। অনেক বিনিয়োগকারী সক্রিয় হয়েছে।

তিনি বলেন, চীনা কৌশলগত অংশীদারের কাছে ডিএসইর শেয়ার বিক্রির অর্থে কর ছাড়ের সরকারি সিদ্ধান্ত পেয়েছি। নতুন করে আরো এক হাজার কোটি টাকার মূলধন বাজারে আসছে। কাজেই পুঁজিবাজারে রাজনীতির মতোই সুবাতাস বইছে।

এদিকে শেয়ার বিক্রির চাপে মূল্যসূচক ও লেনদেন কমলেও গতকাল মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) উভয়ই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। শেয়ার কেনার চাপে সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। একই সঙ্গে বেশির ভাগ কম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচক ও লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আর সূচক বেড়েছে ৫২ পয়েন্ট। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর মূল্যসূচক বেড়েছিল ৩৪ পয়েন্ট।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেন শুরুর পর থেকে শেয়ার কেনার চাপে ডিএসইর সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। এতে মঙ্গলবার সূচক বাড়ার মধ্য দিয়েই লেনদেন শেষ হয়েছে। দিন শেষে সূচক দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২৯৯ পয়েন্ট। ডিএস-৩০ মূল্যসূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৭৬ পয়েন্ট ও ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৩৮ কম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১টির, কমেছে ৭৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪ কম্পানির শেয়ারের দাম।

অপর বাজর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর সূচক বেড়েছে ১০৯ পয়েন্ট। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর সূচক বেড়েছিল ১৫ পয়েন্ট। মঙ্গলবার লেনদেন হওয়া ২৪০ কম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৬টির, দাম কমেছে ৪৯টির আর ২৫ কম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে