টানা ৩য় বারের মতো সেরা করদাতা ওয়ালটন

ডেস্ক রিপোর্ট

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের নাম টানা তৃতীয় বারের মতো সেরা করদাতার তালিকায় ওঠে এসেছে।

আয়কর দিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধিতে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বিশেষ সম্মাননা ‘ট্যাক্স কার্ড’ এর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে ১৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করেছে তার মধ্যে এবারো ফার্ম ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠানটির ওয়ালটন মাইক্রোটেক করপোরেশন ও ওয়ালটন প্লাজা স্থান করে নিয়েছে। ফার্ম ক্যাটাগরিতে অন্য দুই প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এন করপোরেশন ও মেসার্স এ এস বি এস ট্যাক্স কার্ড পাচ্ছে।

এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সেরা করদাতার স্বীকৃতি হিসেবে একই ক্যাটাগরিতে ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশন ও ওয়ালটন প্লাজা ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সেরা করদাতার তালিকায় স্থান করে নিল প্রতিষ্ঠান দুটি।

উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রজ্ঞাপনে সরকার ঘোষিত ‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা-২০১০ (সংশোধিত)’ এর বিধান অনুযায়ী ব্যক্তি শ্রেণিতে ৭৬ জন, কোম্পানি শ্রেণিতে ৫৪ ও অন্যান্য শ্রেণিতে ১১ করদাতাসহ ট্যাক্স কার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছে মোট ১৪১।

ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নাগরিক ক্যাটাগরিতে পাঁচজন, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাটাগরিতে পাঁচজন, প্রতিবন্ধী তিনজন, নারী পাঁচজন, তরুণ পাঁচজন, ব্যবসায়ী পাঁচজন, বেতনভোগী পাঁচজন, ডাক্তার পাঁচজন, সাংবাদিক পাঁচজন, আইনজীবী পাঁচজন , প্রকৌশলী তিনজন, স্থপতি তিনজন, অ্যাকাউন্ট্যান্ট তিনজন, নতুন করদাতা সাতজন, খেলোয়াড় তিনজন, অভিনেতা-অভিনেত্রী তিনজন, গায়ক-গায়িকা তিনজন এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে তিনজনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। বাকি ট্যাক্সকার্ড কোম্পানি ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত করা হয়েছে।

কোম্পানিগুলোকে ট্যাক্সকার্ড দেওয়া হবে ১৪টি ক্যাটাগরিতে। এগুলো হচ্ছে ব্যাংকিং, অব্যাংকিং আর্থিক, টেলিযোগাযোগ, প্রকৌশল, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, জ্বালানি, পাটশিল্প, স্পিনিং ও টেক্সটাইল, ওষুধ ও রসায়ন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, আবাসন, তৈরি পোশাক, চামড়াশিল্প ও অন্যান্য।

প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যান্য করদাতা পর্যায়ে ৪টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে আরো ১১টি ট্যাক্সকার্ড। ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে ফার্ম, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তিসংঘ ও অন্যান্য। যোগ্য করদাতা হিসেবে সবাইকে চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাক্সকার্ড ও সম্মাননা দেবে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, ট্যাক্সকার্ডধারীদের সরকার বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানাবে। যেকোনো ভ্রমণে সড়ক, বিমান বা জলপথে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার পাবেন।

স্ত্রী-স্বামী, নির্ভরশীল পুত্র-কন্যা নিজেদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবিন–সুবিধাও পাবেন তারা। এ ছাড়া বিমানবন্দরে সিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার এবং তারকা হোটেলসহ সব আবাসিক হোটেলে বুকিং পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার পাবেন। ট্যাক্সকার্ড দেওয়ার পর থেকে এর মেয়াদ থাকবে এক বছর।

ক্যাটাগরি অনুসারে ট্যাক্সকার্ডপ্রাপ্তদের নামের তালিকা :

সিনিয়র সিটিজেন : এ শ্রেণিতে ট্যাক্সকার্ড পাচ্ছেন গোলাম দস্তগীর গাজী, তপন চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার বদরুল হাসান, স্যামুয়েল এস চৌধুরী ও অনিতা চৌধুরী।

জেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা : লেফট্যানেন্ট জেনারেল আবু সালেহ মো. নাসিম (অব.), মো. নাসির উদ্দিন মৃধা, এস এম আবদুল ওয়াহাব, মো. ইদ্রিস আলী মিয়া এবং মো. আতাউর রউফ।

প্রতিবন্ধী : চট্টগ্রামের সুকর্ণ ঘোষ, সিলেটের মো. মামুনুর রশিদ ও রাজশাহীর ড. কাজী আখতার হোসেন।

নারী : ঢাকার রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন, রাজশাহী কর অঞ্চলের রত্না পাত্র, ঢাকার পারভীন হাসান, রংপুরের নিশাত ফারজানা চৌধুরী ও ঢাকার মাহমুদা আলী শিকদার।

তরুণ (৪০ বছরের নীচে) : এলটিইউর করদাতা নাফিস সিকদার, ঢাকার গাজী গোলাম মতুর্জা, মো. হাসান, জুলফিকার হোসেন মাসুদ রানা এবং চট্টগ্রামের মো. আমজাদ খান।

ব্যবসায়ী : এ শ্রেণিতে রয়েছেন ঢাকার মো. কাউছ মিয়া, আব্দুল কাদির মোল্লা, কামরুল আশরাফ খান, এলটিইউর সৈয়দ আবুল হোসেন এবং মো. নুরুজ্জামান খান।

বেতনভোগী : লায়লা হোসেন, মোহাম্মদ ইউসুফ, হোসনে আরা হোসেন, খাজা তাজমহল এবং এম এ হায়দার হোসেন।

ডাক্তার : এ শ্রেণিতে ঢাকার এ কে এম ফজলুল হক, প্রাণ গোপাল দত্ত, জাহাঙ্গীর কবির, এন এ এম মোমেনুজ্জামান ও মো. নুরুল ইসলাম।

সাংবাদিক : প্রথম আলো সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ, চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেক এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম।

আইনজীবী : এ শ্রেণিতে ঢাকার মাহবুবে আলম, শেখ ফজলে নূর তাপস, আহসানুল করিম, কাজী মুহাম্মদ তানজীবুল আলম ও নিহাদ কবির।

খেলোয়াড় : এ শ্রেণিতে রয়েছেন তিন ক্রিকেটার। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান।

অভিনেতা/অভিনেত্রী : এ শ্রেণিতে রয়েছেন মাহফুজ আহমেদ, এম এ জলিল অনন্ত এবং এস এ আবুল হায়াত।

শিল্পী : এ শ্রেণিতে রয়েছেন রুনা লায়লা, তাহসান রহমান খান ও এস ডি রুবেল।

স্থপতি : তিনজন পাবেন এ ট্যাক্সকার্ড। তারা হলেন ফয়েজ উল্লাহ, হাসান সামস উদ্দীন ও ইকবাল হাবিব।

প্রকৌশলী : চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর মো. হাফিজুর রহমান ও বগুড়ার মোহাম্মদ হামিদুল হক।

হিসাবরক্ষক : ঢাকার মো. মোক্তার হোসেন, এম বি এম লুৎফুল হাদী ও বিমলেন্দু চক্রবর্ত্তী।

তুন করদাতা : ঢাকার মিয়া মনিকা রফিকুলোভনা, তাফিজুল ইসলাম পিয়াল ও সাইফুল ইসলাম, সিলেটের রানা মালিক, মোসাম্মাৎ সেলিনা আক্তার ও রাসেল রায় এবং রাজশাহীর মোছা. ছিয়াতুন নেছা।

অন্যান্য : এলটিইউর করদাতা এ শ্রেণিতে পাচ্ছেন সদর উদ্দিন খান, আবু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম মজুমদার।

ব্যাংকিং : ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, এইচএসবিসি, সাউথইস্ট ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান : আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড এবং উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক : নেসলে বাংলাদেশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ট্রান্সকম বেভারেজেস।

প্রকৌশল : এ শ্রেণিতে বিএসআরএম স্টিলস, পিএইচপি কোল্ড রোলিং মিলস এবং পিএইচপি নফ কন্টিনিউয়াস গ্যালভানাইজিং মিলস কার্ড পাচ্ছে।

তৈরি পোশাক : রিফাত গার্মেন্টস, জিএমএস কম্পোজিট, দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার, ফোর এইচ ফ্যাশন, কেডিএস গার্মেন্টস ও অ্যাপেক্স লেনজারি।

এ ছাড়া টেলিযোগাযোগে গ্রামীণফোন, জ্বালানিতে তিতাস গ্যাস, সিলেট গ্যাস ও শেভরন বাংলাদেশ, পাটশিল্পে জনতা জুট, সুপার জুট ও আইয়ান জুট, আবাসনে স্পেসজিরো, বে ডেভেলপমেন্টস ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স, চামড়াশিল্পে বাটা শু, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও লালমাই ফুটওয়্যার, অন্যান্য শ্রেণিতে ব্রিটিশ–আমেরিকান টোব্যাকো, মেটলাইফ, লাফার্জহোলসিম ও নিটল মোটরস। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ফার্ম পর্যায় ছাড়াও আরো ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ডের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে