যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশজুড়ে ভোট দিতে শুরু করেন সে দেশের নাগরিকরা। ভোটগ্রহণ শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। এরপর আসতে শুরু করে নির্বাচনী ফলাফল।
এ ভোটের মাধ্যমে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর সব কয়টি (৪৩৫) আসনের প্রতিনিধি নির্বাচন করছেন ভোটাররা।
এ ছাড়া, উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সিনেটের একশ’ আসনের মধ্যে ভোট গ্রহণ করা হয় ৩৫টির। আর ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৩৬টির গভর্নর নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ভোটাররা।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি অঞ্চলের গভর্নর নির্বাচন করা হবে। এর বাইরে অনেক নগরীর মেয়র এবং স্থানীয় কর্মকর্তাও নির্বাচিত হবেন এ ভোটের মাধ্যমে।
এ পর্যন্ত নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, সিনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিনেটে তাদের আসন সংখ্যা হয়েছে ৪৮টি। আর চারটি আসন পেলেই তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। পক্ষান্তরে, ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ৩৮টি সিট।
যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে রিপাবলিকানরা এ পর্যন্ত পেয়েছে ১১৮টি। আর ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ১০৩টি সিট।
এখনো পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে ১৩ রাজ্যে ডেমোক্র্যাটরা ও ১৭ রাজ্যে রিপাবলিকানরা গভর্নর পেয়েছে।
মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে প্রথম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সর্বপ্রথম নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া এবং মেইনের ভোটাররা ভোট দেন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় সর্বপ্রথম ইন্ডিয়ানা রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ এবং কেন্টাকির পূর্ব অংশের ভোট গ্রহণ শেষ হয়। আর সর্বশেষ আলাস্কা রাজ্যে ভোট গ্রহণ শেষ হয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময় ভোট গ্রহণ শেষ হবে। এ কারণে পূর্ণ ফল পেতে সময় লাগবে। ভোটের ফল আসতে শুরু করে স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে।
মধ্যবর্তী এ নির্বাচন ট্রাম্পের জন্য বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেননা এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পাশাপাশি তার ভবিষ্যতের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।
সর্বশেষ জনমত জরিপে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের আভাস পাওয়া গেছে। সিএনএনের সর্বশেষ জনমত জরিপ অনুযায়ী, বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কিছুটা এগিয়ে আছে। জরিপে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষে ৫৫ শতাংশ এবং রিপাবলিকান পার্টির পক্ষে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সিএনএন জানায়, ডেমোক্র্যাটদের জরিপে এগিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে নারী ভোটার। জরিপে অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ নারী ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে মত দিয়েছেন। আর রিপাবলিকানদের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন ৩৫ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার বছর পরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। আর প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মাঝামাঝিতে অর্থাৎ, দু’বছরের মাথায় হয় মধ্যবর্তী নির্বাচন। এ নির্বাচনে জনগণ প্রেসিডেন্টকে নিয়ে তাদের সন্তোষ বা অসন্তোষ প্রকাশের সুযোগ পায়। আর তাই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মানুষ কি ভাবছে এবং তার আবারো ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা কতটুকু তা এ নির্বাচনেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
সাধারণত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম থাকে। তবে এবার রেকর্ড পরিমাণ ভোটার ভোট দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ভোটে কংগ্রেসের দুই কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষ রিপাবলিকান আর অপরটি ডেমোক্র্যাটদের দখলে গেলে যে কোনো বিল পাস করাতে বেশ বেগ পেতে হবে ট্রাম্পকে।