বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের

বিশেষ প্রতিনিধি

উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর মালিকানা ও দেখভালের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে বাংলাদেশ।

এখন থেকে বাংলাদেশ কমিউনেকশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) অধীনে স্যাটেলাইটির সম্পূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

রাজধানীর বাংলামটরে বিসিএসসিএল কার্যালয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা বাংলাদেশকে সম্পূর্ণরূপে বুঝিয়ে দেয়।

স্যাটেলাইটটির টাইটেল স্পন্সর প্রথমে বিটিআরসির কাছে এবং পরে বিটিআরসি বিসিএসসিএলের কাছে টাইটেল স্পন্সর হস্তান্তর করে।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি আনিক বুখডা, বাংলাদেশ কমিউনেকশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটিডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক, থ্যালেস আলেনিয়ার পোগ্রাম ম্যানেজার জিল ওবাদিয়াসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, আজকের দিনটি শুধু বাংলাদেশের নয়, থ্যালেস অ্যালেনিয়াসহ আরও অনেকের জন্যই গর্বের। যখন এটি আকাশে উড়েছে, আমাদের শিশুরা পর্যন্ত উল্লসিত হয়েছে। ব্যবসায়িক লাভের চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আমরা একটি স্যাটেলাইটের গর্বিত মালিক।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি আনিক বুখডা বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটি খুবই বড় অর্জন। এই প্রকল্প আমাদের জন্য সত্যিই খুব খুশির এবং সন্তোষজনক।

দায়িত্ব বুঝে নিয়ে বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে আমাদের স্যাটেলাইট ব্যবসায়িক লাভের মুখ দেখবে বলে প্রত্যাশা করছি।

এ সময় তিনি স্যাটেলাইট নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য গর্বের ও ঐতিহ্যের। মহাকাশ জয় করতে পেরেছি বাঙালি হিসেবে, এটা অত্যন্ত আনন্দের।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় দিনগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’র সফল উৎক্ষেপণ হয়।

নিজ কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর পর এর ইন অরবিট টেস্টসহ (আইওটি) নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়। পাওয়া যায় সফল সংকেত। পরে সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চাম্পিয়নশিপ সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রেও সফলতা দেখিয়েছে দেশের এই স্যাটেলাইট।

এ ছাড়া কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। গত ৩১ জুলাই এ স্যাটেলাইটের জন্য গাজীপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সার্বক্ষণিক মহাকাশে থাকা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর গতিবিধি ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সংকেত দিচ্ছে ও নিচ্ছে। গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ট্র্যাকিং ও কন্ট্রোলিংয়ের কাজ হচ্ছে এবং পুরো সিস্টেমটিকে টেস্ট করা হচ্ছে।

###

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে