বিএনপি ৮০ আসনে ঐক্যফ্রন্ট ও জোটকে ছাড় দিতে চায়

বিশেষ প্রতিনিধি

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিকদের জন্য সর্বোচ্চ ৮০টি আসন ছাড়ার চিন্তা করছে বিএনপি।

জানা গেছে, সম্প্রতি নিজ উদ্যোগে দুই জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জরিপ চালিয়েছে দলটি।

universel cardiac hospital

জনপ্রিয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে সেই জরিপে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে দুই জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের আসন ছাড় দিতে চায়। এদিকে রোববার রাত পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের বেশির ভাগ শরিক দল বিএনপির কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোও দু-একদিনের মধ্যে তালিকা দেবে। সব শরিক দল থেকে তালিকা পাওয়ার পর সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের আসন চূড়ান্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টন থেকে  সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার দুই দিন মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে বিএনপি। মঙ্গলবার এবং বুধবার দুই দিন মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া যাবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ২০ দলীয় জোটের অনেক দলই তাদের প্রার্থীর তালিকা দিয়েছে। সব শরিক দলের কাছ থেকে প্রার্থীর তালিকা পাওয়ার পর কত আসন ছাড়া হবে, তা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দিয়েছে ২০ দলীয় জোটের শরিক অধিকাংশ দল। এর মধ্যে গত রোববার রাতে কর্নেল (অব). ড. অলি আহমদের এলডিপি তালিকা দিয়েছে।

এতে চট্টগ্রাম-১৪, চট্টগ্রাম-১১, চট্টগ্রাম-১৫, চট্টগ্রাম-৭, লক্ষ্মীপুর-১, কুমিল্লা-৭, কুমিল্লা-৫, নেত্রকোনা-১, মেহেরপুর-২সহ ৩০টি আসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা ৩০টি আসনে প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছি।

এছাড়া কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম গণমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রাম-৬সহ ১২ আসনের প্রার্থীর তালিকা করা বিএনপির কাছে তা জমা দেবেন।

এদিকে জামায়াতের একটি সূত্র জানিয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৫০টি আসন চাইবে দলটি। দু-একদিনের মধ্যে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে বিএনপির কাছে তালিকা দেবে। এ দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে তারা।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, ২০ দলীয় জোটের সঙ্গেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করব। যে যেখানে যে মার্কা পাবে, তা নিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচন করবে। ধানের শীষ নয়।

প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে তিনি বলেন, দু-একদিনের মধ্যে আমাদের তালিকা চূড়ান্ত হবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩৫টি আসনে জামায়াত নির্বাচন করে। এসব আসন সংযোজন-বিয়োজন করে এবার তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, গাইবান্ধা-৩, পিরোজপুর-১সহ ৭টি আসনের প্রার্থীর তালিকা আমরা চূড়ান্ত করেছি। বিএনপির কাছে জমা দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, ২০ দলীয় শরিকদের মধ্যে ১০টি দল এরই মধ্যে তাদের প্রার্থীর তালিকা দিয়েছে। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা এখনও প্রার্থী তালিকা দেয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে তারা প্রার্থী তালিকা জমা দেবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করিনি। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছি।

দু-একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে। নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, প্রার্থী তালিকার কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের বৈঠক হয়েছে। প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করে দু-একদিনের মধ্যেই আমরা দেব।

প্রসঙ্গত, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে ২০ দলীয় জোট। সেক্ষেত্রে তারা ফরম কিনতে পারবে কি না- জানতে চাইলে রিজভী বলেন, সেই সিদ্ধান্ত এখনও আমরা পাইনি। আমাদের ২০ দলীয় জোটের যারা, তারা কী এখান থেকে কিনবেন, না কীভাবে কিনবেন, সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত আসেনি।এলে আমরা আপনাদের জানাব

জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থাকায় বিএনপির দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সই করবেন বিএনপি মহাসচিব। শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সই করার এই ক্ষমতা দলের মহাসচিবকে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেয় এই পার্লামেন্টারি বোর্ড।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলের স্থায়ী কমিটিই হবে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। দলের চেয়ারম্যান হবেন পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভাপতি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করবে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

বিএনপি সূত্র জানায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থাকায় পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটিই হবে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। শিগগিরই পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠক হবে।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে