কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে বলেছেন, নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এভাবে কোর্টে আটকে রাখলে নির্বাচনী কাজ কেমনে করবো।
আজ বুধবার নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটের দিকে পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ মাহমুদুল কবিরের আদালতে খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয়। হুইল চেয়ারে করে তিনি আদালতে হাজির হন।
এরপর শুরু হয় এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি। শুনানিতে অংশ নেন এই মামলায় আসামির তালিকায় থাকা মওদুদ আহমদ। শুনানির এক পর্যায়ে দুর্নীতির দুই মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত বিএনপিনেত্রী এই মন্তব্য করেন।
আদালতে খালেদা বলেন, মামলা দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে আমাদের আটকে রাখা হচ্ছে। তাহলে আমাদের বলে দেয়া হোক যে, আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার দরকার নেই। একদিকে মামলা চলবে, অন্যদিকে তারা (ক্ষমতাসীন দল) নির্বাচন করবে- এটা তো হতে পারে না।
খালেদা জিয়া নির্বাচনের পর অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে আমার নেতাকর্মীরা ব্যস্ত থাকবেন। কেউ আসতে পারবেন না। এ কারণে নির্বাচনের পর শুনানির দিন ধার্য করা হোক।
শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারসন প্রশ্ন রাখেন, আমার মামলাগুলো কেন এত দ্রুত বিচার করা হচ্ছে? কয়টা মামলা দ্রুত বিচারে নিষ্পত্তি করা হয়েছে? সেভেন মার্ডার (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন) কি দ্রুত বিচার আইনে হয়েছে?
এই সময় আদালতে পুলিশের উপস্থিতি এবং আদালতের পরিবেশ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।
পরে নির্বাচনের জন্য শুনানি মুলতবির জন্য আবেদন করা হয়। খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেষে আদালত ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে চুক্তির ফলে রাষ্ট্রের তিন হাজার সাতশ ৭৭ কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগ এনে বেগম জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
নাইকো মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।