রাজধানীতে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাঠোমোতে নতুন করে ‘ট্রাফিক কারিগরি ইউনিট’ গঠন করা হচ্ছে। সংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই ইউনিট কার্যকর হলে পর্যাক্রমে পুরো মেট্রোপলিটন এলাকায় স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে এবং সড়কে শৃঙ্খলাও ফিরে আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ ও এনটিএমসি) মো. নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ট্রাফিক বিভাগে এই কারিগরি ইউনিট চালানোর জন্য দক্ষ জনবল রয়েছে। বর্তমানে দক্ষ জনবল দিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে, নতুন এই ইউনিট হলে কিছু জনবল বাড়বে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের শুরুতে ঢাকা মেট্রোপলিটন একটি প্রকল্পের আওতায় সোলার নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করা হলে তা শেষ পর্যন্ত ম্যানুয়ালি পরিচালিত হচ্ছে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ট্রাফিক কন্ট্রোল সেন্টারে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের কাঠামোতে জনবল প্রয়োজন পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই কার্যক্রম পরিচালনা ও একটি ইউনিট গঠন করে ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ একটি ‘ট্রাফিক কারিগরি ইউনিট’ গঠনের প্রস্তাব করে ২০১৭ সালে। পুলিশ সদর দফতর ওই প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রথমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব পাঠালে তা গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুমোদিত হয়। এরপর সম্মতির জন্য প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হলে গত ২৯ অক্টোবর ৪১ জনবল নিয়োগের সম্মতি দেয় মন্ত্রণালয়। তারপর জননিরাপত্তা বিভাগ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য গত ৬ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ১৩ নভেম্বর সরকারের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উত্থাপন করে। কমিটি সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে এই ইউনিট পরিচালনার জন্য কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন লোকবল রয়েছে। প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপে বলা হয়, এই ইউনিটের আর্থিক খাতের ব্যয় আপাতত বহন করা হবে পুলিশ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট খাত থেকে। মোট ৪১ জনবলের বিপরীতে বছরে খরচ হবে দুই কোটি ৪৩ লাখ, ১৬ হাজার ৪৩২ টাকা।
ট্রাফিক কারিগরি ইউনিটে থাকছে তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী একজন, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একজন, নির্বাহী প্রকৌশলী একজন, প্রোগ্রামার একজন, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী (ইলেট্রিক্যাল/সিভিল/ট্রাফিক) তিন জন, সহকারী প্রোগ্রামার একজন, কম্পিউটার অপারেটর চার জন, সিগন্যাল টেকনিশিয়ান থাকবে ছয় জনসহ বিভিন্ন পদে মোট ৪১ জন। এই ইউনিটের জনবলে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৯ জন অফিস সহায়ক থাকবে। এছাড়া ইউনিটে দুইটি পিকআপ ও একটি মাইক্রেবাসও যুক্ত হচ্ছে।