দুদক চেয়ারম্যানের কালো টাকার মালিকদের ভোট না দেয়ার আহ্বান

ডেস্ক রিপোর্ট

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কালো টাকার মালিক ও দুর্নীতিবাজদের ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, যারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, জনগণ তাদের ভোট দেবেন না।

দুদকের চতুর্দশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন তিনি।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তবে নির্বাচনী ব্যয়ের নামে কালো টাকা ব্যয়ের বিষয়টি দুদক পর্যবেক্ষণ করবে। কমিশন প্রত্যাশা করে, নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবাই স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন। নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন কমিশনে ব্যয়-বিবরণী জমা দেবেন।

তিনি বলেন, হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে বা এ ক্ষেত্রে অবৈধ সম্পদের কোনো বিষয় থাকলে দুদক আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা কালো টাকা অর্জন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক, সামাজিক বা পেশাগত পরিচয় কমিশনের কাছে বিবেচ্য নয়। কোনো ব্যক্তি যদি সংবিধান লঙ্ঘন করে কালো টাকা বা অবৈধ সম্পদ অর্জন বা পেশি শক্তি ব্যবহার করে জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন তবে তাকে কমিশন আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমনে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তিনি একটি ঘটনার উদাহরণ টেনে বলেন, কমিশনের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনকালে পেশিশক্তি দ্বারা আক্রান্ত হলে, জনগণের যেভাবে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধে এগিয়ে আসার কথা ছিল, তারা সেভাবে এগিয়ে আসেননি। তবে বিলম্বে হলেও প্রতিবাদ হয়েছিল। এ ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়, আমরা এখনও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আত্মসমালোচনা করতে আমি ভয় পাই না। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করব। বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই জনআস্থায় ঘাটতি রয়েছে। তিনি কর্মকর্তাদের আরও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, কমিশন পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি সেবা দেয়ার পথকে মসৃণ ও নিষ্কলুষ করার চেষ্টা করছে। কমিশন চায় দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধ করতে। তাই কমিশন বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক টিমের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দফতর বা সংস্থার দুর্নীতির সম্ভাব্য উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুপারিশ করে সরকারের কাছে পাঠাচ্ছে। এগুলো স্বতঃসিদ্ধ কোনো বিষয় নয়। কমিশনের নিজস্ব বিচেনায় এসব সুপারিশ করা হচ্ছে।

সরকারি কর্মকর্তারা যদি কোনো অবৈধ চাপ বা অনৈতিক কোনো উদ্দেশ্যে দুর্নীতি করেন তা হলে তাদেরও কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে বলেও সতর্ক করেন দুদক চেয়ারম্যান। তবে অনিকৃচ্ছাকৃত ভুলের কারণে কারও বিরুদ্ধে কমিশন কোনো মামলা করবে না।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনকে তখনই সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হবে, যখন কমিশনের মামলায় শতভাগ সাজা নিশ্চিত হবে। যদিও এক্ষেত্রে বর্তমান কমিশনের সফলতা রয়েছে। কারণ সাজার হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে তা প্রায় ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম, কমিশনের সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক শিরিন পারভীন, উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, সহকারী পরিচালক সেলিনা আখতার মনি প্রমুখ।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে