হাইকোর্টের আদেশে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত

ডেস্ক রিপোর্ট

হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দেওয়া কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির করা আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তা স্থগিতের বিধান নেই বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই মত দেন। এ সময় রায় স্থগিতের বিষয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত এক আইনজীবীর করা আবেদনও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, চাইলে আবেদনকারী আপিল বিভাগে যেতে পারেন। আপিল বিভাগ এ ব্যাপারে একটা নীতি ঠিক করে দিতে পারে। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট সেটা অনুসরণ করতে পারবে।

হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের পর রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আপিল বিচারাধীন অবস্থায় হাইকোর্ট যদি দণ্ড স্থগিত না করে তাহলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দণ্ডপ্রাপ্তরা কেউ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে এটাই এখন প্রতিষ্ঠিত হলো।

অবশ্য বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, হাইকোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কারণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা স্থগিতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে বিষয়ে এখনও কোনো আদেশ হয়নি।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেন, দন্ড স্থগিত চেয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদনটি হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে তার দন্ড বহাল আছে। যদি তার সাজাটা স্থগিত হতো, তাহলে যেসব রাজনীতিক দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন, তারাও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতেন। যেহেতু হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন, তাই আপিল বিচারাধীন রেখে দণ্ডপ্রাপ্তদের আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই।

ইউসুফ মোর্শেদ আরও বলেন, যাদের সুপ্ত ইচ্ছা ছিল খালেদা জিয়াসহ অন্যরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, সেই ইচ্ছাটা আপাতত বাতিল হয়ে গেল।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় ফাঁস করার মামলায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রায় দেন সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম। রায়ে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর এবং ম্যানেজার মাহবুবুল হাসান, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ ও নয়ন আলীকে সাত বছর করে কারাদ দেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী খালাস পান। পরে বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন রেখে ২০১৬ সালের এপ্রিলে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে জামিন দেন হাইকোর্ট। বর্তমানে তার আপিলটি বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় তিনি দ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। গতকাল পর্যবেক্ষণসহ ওই আবেদনটি খারিজ করেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে