টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করা গেছে। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে সহজ জয়েই সিরিজটা শুরু করল মাশরাফির বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
মিরপুরে সহজ জয়ের ছবিটা তৈরি করে দিয়েছিলেন বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বেঁধে রাখে মাত্র ১৯৫ রানে। ৫০ ওভারে ১৯৬ রানের লক্ষ্য। টাইগাররা দেখেশুনে খেলে সহজেই দলকে নোঙ্গর করিয়েছে জয়ের বন্দরে।
অনেকেই ‘সহজ জয়’কথাটায় একটু আপত্তি তুলতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ ইনিংসের চিত্রটা একটু খুঁটিয়ে দেখলে সেই আপত্তিটা থাকার কথা নয়। প্রথমত ৫ উইকেটের জয়টা ধরা দিয়েছে ১৪.৫ ওভার বাকি থাকতে। দ্বিতীয়ত, লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৪২ রানে দুই উইকেট হারানোর পরই যা একটু ‘চাপ চাপ’ মনে হচ্ছিল। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে লিটন দাস ও মুশফিকের ৪৭ রানের জুটিতে সেই চাপ উড়ে যায়। এরপরও লিটন, সাকিব, সৌম্য সরকাররা আউট হয়েছেন বটে।
কিন্তু উইকেট হারালেও হার শঙ্কাটা বড় হয়ে উঠেনি কখনোই। মুশফিকের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বরং ‘জিতবে’ আশাতেই এগিয়েছে স্কোর। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ মিলে শেষও করেছেন দারুণভাবে। প্রত্যাশিত এই জয়ে মুশফিকই যে ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান ব্যাটিং কাণ্ডারি, সেটা এতোক্ষণে বুঝে ফেলার কথা।
৪২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে যখন একটু চাপে দল, ঠিক তখনই ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তিনি। প্রথমে লিটনের সঙ্গে জুটি বেঁধে সেই চাপ দূর করেছেন। এরপর সাকিব, সৌম্য, মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন কাঙ্খিত ঠিকানায়। যে যাত্রায় তিনি পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে।
এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেছেন ওপেনার লিটন দাস। সাকিব ৩০, সৌম্য ১৯, মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ১৪, তামিম ১২ ও ইমরুল কায়েস ৪ রান করেন।
এর আগে রোববার টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে প্রথমে ব্যাটিং নেয়া, ক্যারিবীয়দের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সফল হতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ম্যাচে বাংলাদেশের ৫ বোলারই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। উইকেটের মুখও দেখেছেন ৫ জনেই। তবে উইকেট প্রাপ্তিতে সবচেয়ে সফল ছিলেন মোস্তাফিজ ও মাশরাফি। তারা দুজনেই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ ও রুবেল নিয়েছেন একটি করে।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি মাত্র ৪৩ রানের। যেটি করেছেন ওপেনার শাই হোপ। এছাড়া কেমো পলের ৩৬ এবং রোস্টন চেসের ৩২ রানই যা উল্লেখ্য করার মতো।
মিরপুরের এই জয়টা বোলারদের কৃতিত্বের স্বাক্ষী হয়েই থাকবে। সেটাকে আরও স্পষ্ট করবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি। যেটি উঠেছে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার হাতে। ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে নেতৃত্ব দেন তিনিই।
উল্লেখ্য সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামীকাল মঙ্গলবার, মিরপুরে।