আজ সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
এর পরই শুরু হবে প্রচার উৎসব। প্রচারের সময় যাতে আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন না হয়, সে জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
পাশাপাশি ভোটের মাঠে রয়েছে ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি।
এসব কমিটির কাছে নির্বাচনী অপরাধ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারবেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
এ ছাড়া শেষ দিনে তিন শতাধিক প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। আর যেসব দলের একাধিক প্রার্থী ছিলেন, সেখানে একক প্রার্থী নিশ্চিত করায় ২৫৬ জনের প্রার্থিতারহিত হয়।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ২৭২ এবং বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে ২৯৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৫৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বাকি ৪২টি মহাজোটের শরিকদের জন্য ছেড়ে দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ২৬, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৫, জাসদ (ইনু) ৩, তরিকত ফেডারেশন ২, জেপি ২, জাসদ (আম্বিয়া) ১টি ও যুক্তফ্রন্টকে ৩টি আসনে ছাড় দেয়া হয়। তবে মহাজোটের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টি ১৪৮টি আসনে এককভাবে নির্বাচন করছে।
অন্যদিকে ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি ২৪১ জনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। এ ছাড়া ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ৫৯টি আসনে ছাড় দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে ২০-দলীয় জোটের শরিকদের ৪০ ও ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসন দেয়া হয়েছে।
বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের প্রার্থীরা ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচনে লড়বেন। শুধু এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ নিজ দলের ‘ছাতা’ প্রতীকে ভোট করবেন।
জানা গেছে, ২০-দলীয় শরিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি, এলডিপিকে ৫, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ৪, জাতীয় পার্টি (জাফর) ২, খেলাফত মজলিস ২, বিজেপি ১, এনপিপি ১, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১, লেবার পার্টি ১, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশকে ১টি আসন দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসন ছাড় দেয়া হয়। এর মধ্যে গণফোরাম ৭, জেএসডি ৪, নাগরিক ঐক্য ৪ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে ৪টি আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট ১৪৭ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আটটি দল নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট গঠিত হয়।
এদিকে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) পাঁচটি আসনে দলটির প্রার্থীকে হুক্কা প্রতীক দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছেন।
কল্যাণ পার্টি কুমিল্লা-৭ আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী সুলতান মঈন আহম্মেদকে দলীয় প্রতীক হাতঘড়ি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মো. আলমগীর হোসাইনকে দলীয় প্রতীক কাঁঠাল দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ এক চিঠিতে দলের প্রধানসহ তিনজনকে দলীয় প্রতীক গাভী দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তারা হলেন- জেবেল রহমান গানি, সুমি আক্তার শিল্পী ও মো. ওয়াজি উল্লাহ মাতব্বর অজু।
জাতীয় পার্টি-জেপি কুড়িগ্রাম-৪ ও পিরোজপুর-২ আসনে দলের প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক বাইসাইকেল দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এক চিঠিতে ইসিকে জানিয়েছে, দলের প্রধান হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারসহ তিনজন নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন। তবে ময়মনসিংহ-৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, গাইবান্ধা-৩, রংপুর-২ ও বরিশাল-৬ আসনে দলের প্রার্থীকে মশাল প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
বিকল্পধারা বাংলাদেশ এক চিঠিতে মাহী বি. চৌধুরীসহ তিনজন নৌকা ও বাকি ২৫টি আসনের প্রার্থীকে কুলা প্রতীক দেয়ার কথা জানিয়েছে।
ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, রোববার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। এদিন বিকাল ৫টার মধ্যে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে তাদের দলীয় ও জোটের চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা নিজ নিজ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ওই তালিকার অনুলিপি কমিশনকে দিতে বলা হয়।