প্রথমবার জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী

সারাদেশ ডেস্ক

বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা দীর্ঘ বঞ্চনার পর স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে জীবনে প্রথম বারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

দেশের বৃহত্তম ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ার মানুষ উচ্ছ্বসিত হলেও নির্বাচিত প্রার্থীর কাছে ছিটমহলের উন্নয়ন এবং মাদকদ্রব্য নির্মূলে ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ায় ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবসান ঘটে পরিচয়হীন জীবনের। রাষ্ট্রের পরিচয় পায় বাংলাদেশ-ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহলবাসী।

বিনিময়ের ফলে ভারতের অভ্যন্তরে যোগ হয় ৫২টি ছিটমহল এবং বাংলাদেশে অভ্যন্তরে আসে ১১১টি। এর মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯, পঞ্চগড়ে ৩৬, নীলফামারীতে চার এবং কুড়িগ্রামে ১২টি ছিটমহল। ফুলবাড়ি উপজেলার কাঁটাতারের মাত্র ৫ কি.মি. অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় ছিটমহল দাসিয়ার ছড়া। এখানে লোকসংখ্যা সাত হাজার ৬৭২ জন। এদের মধ্যে ভোটার তিন হাজার ১৭২ জন। দাসিয়ার ছড়াকে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়।

দাসিয়ার ছড়ার মানুষ সংসদীয়-২৬ (কুড়িগ্রাম-২) আসনের ভোটার। এ আসনটি কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মহাজোটের একক প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ১০টি ছিটমহলকে ভূরুঙ্গামারী সদর, পাথরডুবি ও শিলখুঁড়ি ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। এ ছিটমহলগুলোতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের বসবাস হলেও ভোটার প্রায় আট শতাধিক।

সংসদীয়-২৫ (কুড়িগ্রাম-১) আসনের জন্য ভোট দেবেন সাবেক এ ছিটবাসীরা। ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলা নিয়ে কুড়িগ্রাম-১আসন। এ আসন থেকে মহাজোটের আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

দাশিয়ার ছড়ার ছোট কামাত গ্রামের জয়নব বেওয়া (৯৮), সমন্বয় পাড়ার আব্দুর রহমান (৮২), বটতলার পাড়ার রমিছ বেগম (৬০) জানান, জীবনের শেষ বয়সে এসে প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেব এর চেয়ে খুশি আর হয় না। যে সরকার আমাদের পরিচয় দিয়েছে, নাগরিকত্ব দিয়েছে সেই সরকারের প্রতিনিধিকেই ভোট দেব।

তারা আরও বলেন, ছিটমহলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নির্মূলে প্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, সাবেক ছিটবাসীসহ সব ভোটার যেন অবাধে ভোট দিতে পারে সে ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবাধ,শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে