তরুণদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ভালোবাসতে হবে। মানুষকে ভালোবাসতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে কী পেলাম না পেলাম, আমি দেশের জন্য কতটুকু দিতে পারলাম, মানুষের জন্য কতটা দিতে পারলাম তা ভাবতে হবে। পরশ্রীকাতরতা থেকে বের হয়ে এসে নিজেকে নিজের বলতে হবে, আমি পারি। আমি আমার মতো করেই ভালো করব।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ফেসবুক পেইজে একযোগে সম্প্রচার হয়। দেশের ইতিহাসে টেলিভিশন অনুষ্ঠানে কোনো প্রধানমন্ত্রীর তরুণদের মুখোমুখি হওয়া এটিই প্রথম।
ডা. নুজহাত চৌধুরীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে দেশেন বিভিন্ন পেশাজীবী, চাকরিজীবী, উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত এবং দেশ গঠনে উদ্যমী ১৫০ তরুণ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি তরুণদের কাছ থেকে গ্রহণ করেন দেশ গঠনে তাদের পরিকল্পনা ও মতামত।
শেখ হাসিনা বলেন, জীবনে অনেক ঝড় ঝাপ্টা আসবে। কিন্তু ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে যে কোনো বাধা অতিক্রম করা যায়। একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যদি কেউ এগিয়ে যায় তাহলে কোনো বাধাই বাধা বলে মনে হবে না। দেশকে এতদূর নিয়ে আসতে পেরেছি তার প্রধান কারণ এই ইচ্ছা শক্তি। জাতির জনক বলে গেছেন, মহৎ অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন। ত্যাগের মধ্যে দিয়েই অর্জন করা যায়। আর সৎ থাকতে হবে। যদি সৎ না থাকতাম, তাহলে ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করতে পারতাম না। পদ্মা সেতুর কাজও শুরু করতে পারতাম না। আমার এই একটি সিদ্ধান্ত বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদাকে অন্য এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমি তোমাদের কাছে এটাই চাই, যে সেই আত্মমর্যাদা তোমরা ধরে রাখবে। যেখানে আমরা বাংলাদেশকে রেখে যাচ্ছি, তোমরা সেখান থেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। তোমাদের হাতে বাংলাদেশকে তুলে দিচ্ছি কারণ তোমরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ দ্রুত ওপরে উঠে গেলো দেখে আমাকে একটা অশুভ প্রতিযোগিতা করতে হবে সেটা ঠিক নয়। সেই সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানুষের প্রতি ভালবাসা থাকতে হবে। আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হই তাহলে একটি মানুষও অবহেলিত থাকবে না। প্রত্যেক মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হবে। সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া। আর তোমাদের দায়িত্ব নিজের মাঝে সেই ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করে দেশের প্রতি দায়িত্ব, নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব এবং প্রতিবেশী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা। আর সব সময় একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চললে দেশকে কিছু দিতে পারবে, নিজেও জীবনে কিছু করতে পারবে। হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই।