বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও লোকসভায় পাস হয়ে গেল সংশোধিত তিন তালাক বিল। স্ত্রীকে আর তাৎক্ষণিক তালাক দিতে পারবেন না মুসলিম পুরুষরা।
মুখে তিনবার তালাক বললেই বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না তাদের। বৃহস্পতিবার লোকসভায় সংশোধিত তিন তালাক বিল পাস হয়েছে। তাতে সমর্থন জানিয়েছেন ২৪৫ জন সংসদ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ জন। একপর্যায়ে ভোটাভুটির আগেই অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যান কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে-র সংসদ সংসদরা।
বিলটি আইনে পরিণত হওয়ায় জামিন-অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধের তকমা পাবে তিন তালাক প্রথা। অভিযুক্ত স্বামীর শাসি্ত হবে তিন বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা। আর স্ত্রী পাবেন ভরণপোষণ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজারের।
বৃহস্পতিবার সকালে লোকসভায় সংশোধিত বিলটি পেশ করা হয়। একাধিক সংশোধনের দাবি নিয়ে শুরু থেকেই বিলটির বিরোধিতা করছিল কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে। তিন তালাক প্রথাকে ফৌজদারি অপরাধের আওতায় আনার বিপক্ষে ছিল তারা। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে সংসদের যেৌথ কমিটির হাতে বিলটি তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছিল।
এ দিনও নিজেদের দাবিতেই অনড় ছিল কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে। তিন তালাক বিল নিয়ে মূলত তিনটি বিষয়ে আপত্তি তোলেন বিরোধী শিবিরের সংসদ সদস্যরা, যার মধ্যে অন্যতম হল সাজার মেয়াদ।
ওই বিলে তাত্ক্ষণিক তালাক দিলে স্বামীর তিন বছর হাজতবাসের কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের যুক্তি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া, স্ত্রীকে ত্যাগ করার উদাহরণ নতুন নয়। কিন্তু অন্য কোনো ধর্মে তা নিয়ে স্বামীর সাজার মেয়াদ ঘোষণা করা নেই। তা হলে শুধু ইসলামের ক্ষেত্রে এমন নিয়ম প্রয়োগ করা হচ্ছে কেন?
স্বামী জেলে গেলে স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব কে সামলাবে, সে কথাও স্পষ্ট করে বলা নেই ওই বিলে। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তীব্র সমালোচনা করে কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেব বলেন, পৃথিবীর কোনো ধর্মেই এই ধরনের সাজার কথা উল্লেখ নেই। তাই নয়া আইন এনে মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষা করছে না মোদি সরকার। বরং মুসলিম পুরুষদের শাসি্ত দেয়াই আসল লক্ষ্য তাদের।’
বিল পাস করানোর জন্য সরকার যতটা বদ্ধপরিকর ছিল বিরোধীরাও ততটাই অনড় ছিল নিজেদের অবস্থানে। দুই শিবিরের মধ্যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তব্র বাদানুবাদ হয়।
শেষ পর্যন্ত, কংগ্রেস ও এডিএমকের অনুপস্থিতিতেই বিল পাস হয়ে যায়। বিল পাস হওয়ার পরও এ নিয়ে চলছে রাজনৈতিক ধস্তাধসি্ত। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই বিল সংবিধান বিরোধী, মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেস ভোটব্যাংকের রাজনীতি করছে।