গাজর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন

গাজর একপ্রকার মূল জাতীয় সবজি। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপ। পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক গাজরই চীন দেশে উৎপাদিত হয়। নানা প্রকার খাদ্য তৈরিতে গাজর ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে সালাদে এর ব্যবহার ব্যাপক। একে সাধারণত গৃহের বাগানের সবজি উৎপাদিত করা হয়। গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। বিশেষ করে শীতকালীন এই সকল সাধারণ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সব চাইতে ভালো সবজি হচ্ছে এই গাজর। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিনের যোগান গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। গাজরের শাক মধুর, তীক্ষ, কটু স্বাদে হয় ও শরীরকে উষ্ণ করে। গাজরে প্রচুর ভিটামিন এ আছে। খাদ্যদ্রব্যে সবচেয়ে সহজে ও সস্তায় ভিটামিন এ পাওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায় হলো গাজর খাওয়া।

এবার তবে গাজরের কিছু ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে : নিয়মিত গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। কারণ এতে আছে বেটা ক্যারোটিন, যা একপর্যায়ে চোখের রেটিনায় গিয়ে পৌঁছে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সাথে রাতের অন্ধকারে চোখে ভালো দেখার জন্য দরকারি বিশেষ উপাদানের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে গাজর।

মস্তিষ্কে গঠনে : গাজরের রস মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে শরীরের পুষ্টি এবং বুদ্ধির বিকাশের জন্যে গাজর খাওয়া খুবই প্রযোজন। এতে ফসফরাস থাকায় যারা মাথা খাটিয়ে কাজ করেন তাদের গাজর ও গাজরের শাক খুব উপকারী।

ক্যানসার প্রতিরোধে : আমাদের শরীরে হজমের পর খাদ্যের থেকে যাওয়া উচ্ছিষ্টকে ফ্রি র‌্যাডিকেলস বা মৌল বলে। এই ফ্রি র‌্যাডিকেলস শরীরের কিছু কোষ নষ্ট করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার এই ধরনের মৌলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। শরীরে ক্যানসারের কোষ উৎপাদন কম হয়। এক্ষেত্রে গাজর খুবই উপকারী।

হার্টের সুরক্ষায় : শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং চাপ মুক্ত থাকলে হার্ট সুস্থ থাকে। আর গাজর ডায়েটরি ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ থাকে। যেগুলো ধমনির ওপর কোনো কিছুর আস্তরণ জমতে না দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, হার্টকে সুস্থ রাখে।

ত্বকের যতেœ : সুন্দর ত্বকের জন্য গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। কারণ গাজরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজের উপস্থিতি আছে। এই উপাদানগুলো ত্বককে রাখে সুস্থ এবং সতেজ। বিশেষ করে এসব পুষ্টি উপাদান ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, স্কিন টোনকে উন্নত করা এবং ত্বকে দাগ পড়া থেকে রক্ষা করে।

ইনফেকশন থেকে রক্ষায় : গাজর এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। এটি ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেখানে লাগিয়ে নিন কুচি করা গাজর বা সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট। তাতে ইনফেকশন হবার আশঙ্কা থাকবে না।

কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে : কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাজর খুবই কার্যকর। গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়ামই এর মূল কারণ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে, ফলে ওজন কমে।

শিশুর দাঁত গঠনে : শিশুদের গাজরের রস খাওয়ালে দাঁত বেরোতে কোনো কষ্ট হয় না, আর দুধও ঠিকমতো হজম হয়।

গ্যাস্ট্রিক দূর করতে : পেটে যদি গ্যাস্ট্রিক আলসার বেড়ে যায় তা সারানোর জন্য গাজর মহৌষধ। এছাড়াও নিয়মিত গাজর খেলে অন্যান্য অসুখের সঙ্গে শরীরের জ্বালা (দাহ), পেট ফাঁপা বা পেটে বায়ু হওয়া ও তৃষ্ণা সারে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে