নগরবাসীর নানা সমস্যা মাথায় রেখে তাদের জীবনমান উন্নয়নে ঢাকার চারটি এলাকা চিহ্নিত করে ‘ঢাকা নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ‘ঢাকা নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রকল্প’র আওতায় ঢাকা শহরকে ৪টি ভাগে ভাগ করে উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ডিএসসিসি এলাকায় যেসব নদী, পুকুর বা ঝিল রয়েছে সেগুলোর উন্নয়ন করে দুপাশে বাঁধাই করে দেয়া, সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হবে যাতে অবসর সময়ে মানুষ এখানে এসে সময় কাটাতে পারেন।
এ প্রকল্পের আওতায় এসব এলাকায় পাবলিক টয়লেট, কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে যার ওপরে জিমনেশিয়াম ও লাইব্রেরি থাকবে। সেই সঙ্গে এলাকার যেসব রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা ও ব্যবহার অযোগ্য সেগুলো ঠিক করার পাশাপাশি নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে। এছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এসটিএস নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
যদিও গত বছর পুরনো ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা আধুনিকায়নে পরিকল্পনা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এটি বাস্তবায়ন হলে পুরনো ঢাকার ঘিঞ্জি ও জরাজীর্ণ চেহারার পরিবর্তে থাকতো প্রশস্ত রাস্তা ও বহুতল ভবন। জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই রাজধানীর পুরনো ঢাকাকে আধুনিক শহরে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যে জমির মালিকদের সমন্বয়ে ব্লক ভিত্তিক নগর গড়ার প্রাথমিক প্রকল্পের কাজের পরিকল্পনাও শেষ করেছিল রাজউক।
ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিচালক প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম সে সময় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, মালিকরা চাইলে আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীন ছোট ছোট বাড়ি ভেঙে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে ২০০ ফিট করে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়ি-জমির মালিকদের অনাস্থার কারণে আরবান রি-ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। বাতিল হয়ে যায় প্রকল্পটি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর খিলগাঁও, বাসাবো, পুরনো ঢাকা, কামরাঙ্গিরচর ও লালবাগ এলাকার মানুষের বর্তমান নাগরিক সুবিধা অত্যন্ত নাজুক। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় এসব এলাকার বেশির ভাগ রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। নেই বর্জ্য ফেলার তেমন কোনো ব্যবস্থা; পর্যাপ্ত পার্ক, খেলার মাঠও নেই। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের অবসর সময় কাটানো এবং বাচ্চাদের খেলাধুলার স্থান নির্ধারণে ভিন্নভাবে পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
এসব এলাকায় যেসব নদী, পুকুর বা ঝিল রয়েছে সেগুলোর উন্নয়ন করে দু’পাড় বাঁধাই করে দেয়া হবে। এছাড়া দুপাশে লাগানো হবে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। পাবলিক টয়লেট, কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস বিল্ডিংও নির্মাণ করা হবে।
আগামী ২০২২ সাল নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, নগরবাসীর সুবিধার্থে ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ চলছে। কাজগুলো সম্পন্ন হলে সেখানে জনবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে। এছাড়া নাগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে ঢাকার চারটি এলাকা চিহ্নিত করে নতুন একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এসব এলাকার নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার চিত্রও বদলে যাবে।