চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তিতে অগ্রগতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ তিন মাসের জন্য স্থগিত রয়েছে। এরই মধ্যে দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প জানিয়েছেন, বাণিজ্য ইস্যুতে চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে দীর্ঘ এবং ভালো কথা হয়েছে। আট দিন ধরে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে মার্কিন সরকারে। এখনো এ অবস্থা নিরসনের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।

universel cardiac hospital

এ অবস্থার জন্য ডেমোক্র্যাটদের তীব্র সমালোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের যখন এমন অবস্থা তখনই সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প।

চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার অন্যতম ছিল চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ। চীন য্ক্তুরাষ্ট্রের থেকে ধারাবাহিকভাবে সুবিধা নিয়ে আসছে বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই পাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্কারোপের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এর জবাবে মার্কিন পণ্যেও পাল্টা শুল্ক বৃদ্ধি করে চীন। দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তিধর দেশের মধ্যে শুরু হয় বাণিজ্যযুদ্ধ। আর এর প্রভাব পড়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ করে দুই দেশ।

বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ায় বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হয় চীন যুক্তরাষ্ট্র। ডিসেম্বরের শুরুতে বাণিজ্য যুদ্ধ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এরমধ্যে স্থায়ীভাবে চুক্তি করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলো দুই দেশ।

শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ভালো আলোচনা হয়েছে।

এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, চুক্তির বিষয়টি ভালোভাবে এগোচ্ছে। যদি এটি সম্ভব হয় তাহলে সকল বিষয়ে বিতর্কের আবসান হবে। সেটি তৈরিতে বড় অগ্রগতি হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শি জিনপিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথোপকথনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দুই দেশ এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন শি জিনপিং। সিনহুয়াকে শি জানান, আশা করছি দুই দেশে শীঘ্রই বৈঠকে বসবে এবং কঠিন পরিশ্রমের পর একটি ঐক্যমতে পৌঁছবে। যা বিশ্বের জন্য উপকারী হবে। যত দ্রুত সম্ভব এটি বাস্তবায়িত হবে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে, দুই দেশের সম্পর্কে দূরত্ব ছিল। কিন্তু উভয় দেশের শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য এবং স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাঙ এক বিবৃতিতে বলেন, ৪০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। দেশের আংশিক বাজেটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সই না করায় এমন অবস্থা তৈরি হয়। সিনেটররা প্রেসিডেন্টের কাছে যে বাজেট অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন সেখানে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

তবে সিনেটররা বাজেটে সেই বিল সংযুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানান। যার কারণে বিলে সই করা থেকে বিরত থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, বাজেটে মেক্সিকো দেয়ালের অর্থ বরাদ্দ দেয়া না হলে তিনি এতে সই করবেন না।

অপরদিকে সিনেটররাও এ বিষয়ে ট্রাম্পকে ছাড় দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন বছরের শুরুতে এই সংকটের জট খুলতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে