সরকার নতুন বছরের শুরুতে তৈরি পোশাকসহ রফতানি খাতের জন্য একটি সুখবর দিয়েছে। শতভাগ রফতানিমুখী শিল্পে ‘উৎসে কর’ আরও কমে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এখন থেকে পোশাকসহ অন্যান্য রফতানিকারকরা পণ্য রফতানি করে ১০০ টাকা আয় করলে এর বিপরীতে সরকারকে কর দেবেন শূন্য দশমিক ২৫ টাকা।
এর আগে কর দিতে হতো শূন্য দশমিক ৬০ টাকা। অর্থাৎ আগের চেয়ে কর কমেছে ৫৮ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কর ছাড়ের এই সুবিধা কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি থেকে।
তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সুবিধা দেওয়া হলেও এনবিআর বলেছে, পোশাকসহ অন্যসব রফতানিমুখী শিল্পে সমতা আনতে একই হারে উৎসে করহার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, সরকার এমন এক সময় কর সুবিধা দিল, যখন পোশাক খাতের নতুন মজুরি নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ চলছে। সর্বশেষ, বিষয়টি নিয়ে ফয়সালার জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক চলছে।
বিজিএমইএ নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, শিগগিরই নতুন মজুরি নিয়ে চলমান অসন্তোষ দূর হবে। এরই মধ্যে পোশাকশিল্পে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন হয়েছে।
কর ছাড়ের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পোশাক রফতানিকারকরা বলেছেন, এতে করে পোশাক খাতের ওপর আর্থিক চাপ কমবে।
নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, পোশাক খাতের নূ্যনতম মজুরি মাসিক ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ একজন শ্রমিক কোনো পোশাক কারখানায় চাকরি পেলে শুরুতেই বেতন পাবেন ৮ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ৫ হাজার ৩০০ টাকা। ফলে নতুন বেতন কাঠামোতে গড়ে বেতন বেড়েছে ৫১ শতাংশ।
নতুন এ বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে কর কমানোর দাবি করে বিজিএমইএ। এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিজিএমইএ বলে, শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরি দিতে হলে পোশাক মালিকদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়বে। এ চাপ কমাতে হলে আরও কর প্রণোদনা দিতে হবে। তা না হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।
বিজিএমইএর পক্ষ থেকে এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ‘উৎসে কর’ কমানোর বিষয়ে সার-সংক্ষেপ লিখে পাঠায় অর্থমন্ত্রীর কাছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। পরে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেন অর্থমন্ত্রী। এটি কার্যকর করতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ভেটিংয়ের জন্য। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে প্রজ্ঞাপন জারি করে তা কার্যকর করে এনবিআর গতকাল।
সর্বশেষ, পোশাকসহ রফতানি খাতে ‘উৎসে কর’ কমানো হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। তখন ১ টাকা থেকে ৬০ পয়সা (০.৬০%) নির্ধারণ করা হয়।