বগুড়া-৭ থেকে নির্বাচিত বাবলুর শপথে ক্ষুব্ধ বিএনপি

সারাদেশ ডেস্ক

রেজাউল করিম বাবলু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ বর্জন করলেও তিনি শপথ নিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে গিয়ে শপথ নেন এ নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি এভাবে শপথ নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া-৭ আসনে সবসময়ই বিএনপির শক্ত অবস্থান ছিল। সেখানে আগের সব নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করেছেন। প্রতিবারই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। পরে উপনির্বাচনেও সেখানে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন বিএনপি প্রার্থীরা। নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজ এলাকা নোয়াখালী-৫ আসনে পরাজিত হন। তখন খালেদা জিয়ার ছেড়ে দেওয়া বগুড়া-৭ আসনে তাকে বিএনপি প্রার্থী করা হয়। তখন তিনিও বিপুল ভোটে জয়ী হন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেনি বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী হন খালেদা জিয়া। পরে দুর্নীতির মামলায় তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় বিকল্প হিসেবে গাবতলী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোরশেদ মিল্টনকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ না ছাড়ার অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

পরে মোরশেদ মিল্টন নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও ফেরদৌস আরা খান নামে এক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোরশেদ মিল্টনের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন। ওই রিটের ভিত্তিতে ২৫ ডিসেম্বর আবারও তার মনোনয়ন বাতিল করেন আদালত।

বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে দলীয় প্রার্থী না থাকায় হতাশ হয়ে পড়ে স্থানীয় বিএনপি। তবে আসনটিতে আওয়ামী লীগ বা মহাজোট প্রার্থীকে ঠেকাতে বিএনপির সমমনা বিকল্প প্রার্থীর খোঁজ করেন তারা।

বিএনপি নেতারা জানান, দলীয় প্রার্থী না থাকার সুযোগ নেওয়ার জন্য রেজাউল করিম বাবলু বিএনপির সমর্থন পেতে দলের স্থানীয় ও উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে ধরনা দিতে থাকেন। শেষ মুহূর্তে ২৮ ডিসেম্বর তাকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল। এজন্য তার কাছ থেকে বিএনপির সদস্য ফরমে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তিনিও বিএনপির একজন সদস্য ও প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেন।

বিএনপির সমর্থন পাওয়ার পরই কপাল খুলে যায় উপজেলা নির্বাচনে মাত্র ১৭ ভোট পাওয়া বাবলুর। ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে প্রায় দেড় লাখ বেশি ভোট পান বাবলু। এ নির্বাচনে তিনি পান এক লাখ ৯০ হাজার ২৯৯ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ৬৫ হাজার ২৯২ ভোট। আর মহজোট সমর্থিত জাপা প্রার্থী অ্যাডভোকেট আলতাব আলী পেয়েছেন মাত্র ২৬ হাজার ৫৪ ভোট।

এর মধ্যে গত ২ জানুয়ারি দৈনিক করতোয়ায় এক বিবৃতিতে রেজাউল করিম বাবলু বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী, আমি কোনো দলের নই। আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তবে কোন দল এবং কেন তার স্বাক্ষর জাল করেছে বিবৃতিতে তা উল্লেখ করেননি তিনি।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে